দেশবাসীকে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান -ফোকাস বাংলা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে আরও সচেতন হতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে মাদকের বিরুদ্ধে। মাদক বিশ্বে এখন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না। কিন্তু ভৌগোলিক কারণে এর প্রভাব আছে বাংলাদেশে। সন্ত্রাসের পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি অনুযায়ী কাজ করছে সরকার। মাদকাসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু নিরাময় কেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে 'মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৪' উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আসাদুজ্জামান খান বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ ওর্ যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। যেসব দেশ থেকে মাদক আসছে, ওই সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই সব দেশও কাজ করছে। ভারত ইতোমধ্যেই মাদক চোরাচালানের বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে। কিন্ত মিয়ানমারকে বহুবার অনুরোধ করা হলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলোচনা সভায় বলেন, দেশের কারাগারগুলোতে থাকা বন্দিদের অধিকাংশই মাদক মামলার আসামি। এমনকি কারাগারে থাকা আসামিদের একটি বিরাট অংশ মাদকাসক্ত। যাদের অধিকাংশই নানা মামলায় জেলে রয়েছেন। এজন্য দেশের সব কারাগারে পর্যায়ক্রমে মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উসকে দেওয়া হচ্ছে। কারা কী উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের উসকানি দিচ্ছে, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। উসকানিদাতারা আন্দোলনাকারীদের ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টাও করছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উসকানিদাতাদের তৎপরতা বেড়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের যথেষ্ট বাড়াবাড়ি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসব উসকানিদাতার সংখ্যাও বাড়ছে। উসকানিদাতারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছেন। সার্বিক ঘটনা পর্যালোচনা করে সেটিই বোঝা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ভুল পথে নেওয়ার লোকের অভাব নেই। সেই ধরনের ঘটনাই ঘটছে। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কারা উসকানি দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন এবং কেন কী উদ্দেশ্যে দিচ্ছেন সেসব বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে, সেটি তদন্ত হবে। তদন্তের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তদন্তের আগে কিছু বলা উচিত হবে না। মামলা তুলে নিতে আন্দোলনকারীদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটামের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে মামলা করতে পারেন। তদন্তের পর যদি মামলাটির যদি তেমন কোনো গুরুতর অভিযোগ বা মেরিট বা মামলা চালানোর মতো তথ্য-উপাত্ত না থাকে তাহলে সেটি স্বাভাবিকভাবেই বাতিল হয়ে যাবে। এখানে ২৪ ঘণ্টা, ১০ দিন বা ২৪ দিন বা সময়ের বিষয়টি মুখ্য না। তদন্তে যদি মামলার আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে আইন মোতাবেক মামলার বিচার শুরু হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে যে বিক্ষোভ করেছে, সেটি হয়তো শিক্ষার্থীরা না বুঝেই বা ঝুঁকের মাথায় করে ফেলেছে। কোটা ইসু্যতে আগামী ৮ আগস্ট শুনানি হবে। আদালত আন্দোলনকারীদেরও অংশ নিতে বলেছেন। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করছে। যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে, তাই এখন সবকিছুই আদালতের ওপর নির্ভর করছে। সবই এখন বিচার বিভাগের হাতে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান।