শেরপুরে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ

শাহানাজ-সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ধনকুন্ডি শাহানাজ-সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়টি পদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। নিয়োগ কমিটির প্রভাবশালী সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম নিজের পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি পাইয়ে দিতে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি এই কাজটি করেন বলে অভিযোগ করেছেন নিয়োগ কমিটির একাধিক সদস্য। শুক্রবার বিকাল ৪টায় ওই বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে এই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময় পরীক্ষা শুরুর পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি জানাজানি হলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি এই বিদ্যালয়ের ছয়টি শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে ছয়জন, অফিস সহকারী পদে সাতজন, কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে আটজন, অফিস সহায়ক পদে ছয়জন, নিরাপত্তাকর্মী চারজন ও আয়া পদে তিনজন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন। তাদের পরীক্ষার নির্ধারিত দিন ১২ জুলাই অংশ নিতে চিঠি দেওয়া হয়। সিংহভাগ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু নিয়োগ কমিটির দুইজন সদস্যকে না জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম একাই প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। এমনকি পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্রের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জানিয়ে দেন। পরীক্ষা চলাকালীন সময় বিষয়টি ধরা পড়লে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ ও বগুড়া জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম বিব্রতবোধ করেন। বাকি দুইজন সদস্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মাহবুব প্যারিস ও সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ধনকুন্ডি শাহানাজ সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি গোলাম মাহবুব প্যারিস প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির সব সদস্যকে জানানো এবং স্বাক্ষর নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। বরং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একাই সেটি করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে পরীক্ষা শুরুর আগেই পছন্দের চাকরিপ্রার্থীকে প্রশ্নপত্র জানিয়ে দেওয়ার অভিযাগ রয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করলেও প্রশ্নপত্র তৈরির সময় দুইজন সদস্যকে না জানানোর কথা স্বীকার করেছেন।