গাংনীর চিৎলা খামারে নষ্ট হলো ৩০ একর ধানক্ষেত

নিম্নমানের কীটনাশক ও সার প্রয়োগ

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
মেহেরপুরের গাংনীর চিৎলা বিএডিসি ফার্মে পুড়ে যাওয়া ৩০ একর ধানক্ষেত -যাযাদি
মেহেরপুরের বৃহৎ বীজ উৎপাদন খামার গাংনীর চিৎলা বিএডিসি ফার্মের ৩০ একর জমির ধানক্ষেত পুড়ে বিনষ্ট হয়েছে। নিম্নমানের সার ও কীটনাশক ব্যবহার করায় আগাছা বা পোকা বিনষ্ট না হয়ে ধানক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। খামারের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল আলমের নিকটাত্মীয়র কাছ থেকে নিম্নমানের সার ও কীটনাশক ব্যবহারে এমনটি ঘটেছে বলে শ্রমিকরা জানালেও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন যুগ্ম পরিচালক। তবে ধানক্ষেত বিনষ্টের বিষয়টি 'বাই মিসটেক' বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে চিৎলা পাট বীজ খামারে ১২০ একর জমিতে আউস আবাদ করা হয়। জমিতে পোকা মাকড় ও আগাছা বৃদ্ধি পাওয়ায় ফার্মের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম স্থানীয় বাজার থেকে সার ও কীটনাশক না কিনে তার নিকট আত্মীয় চুয়াডাঙ্গার জনৈক নাজিম উদ্দীনের কাছ থেকে নিম্নমানের সার ও কীটনাশক সংগ্রহ করে তা ধানক্ষেতে ছিটিয়ে দেন। দিন পাঁচেক আগে নাজিম উদ্দীন নামের ওই ব্যক্তি নিজেই উপস্থিত থেকে ফার্মে কর্মরত শ্রমিক দিয়ে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কি কারণে ও কি ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি কর্মরত লেবারদের। এর দুই দিনের মধ্যেই ধানগাছগুলো মরতে শুরু করে। ধানক্ষেত বিনষ্টের সংবাদ পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকগণ ধানক্ষেত ও ব্যবহৃত কীটনাশকের বোতল সংগ্রহ করে উপজেলা কৃষি অফিসার এমরান হোসেনকে দেখান। এমরান হোসেন জানান, কীটনাশকগুলো আগাছা পুড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। কীটপতঙ্গ দূর হয় না। এই কীটনাশক বেশি ব্যবহার করলে ধান গাছের গোড়ায় ধীরে ধীরে পচন ধরে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফার্মে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, ধানের জমিতে অনেক আগাছা জন্মায়। এখানে শ্রমিক দিয়ে আগাছা পরিষ্কার না করিয়ে তার নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে কীটনাশক এনে তা ক্ষেতে প্রয়োগ করেন। ক্ষেত নষ্ট হলে খামারের কর্মকর্তাগণ সফঙ্গ সঙ্গে ওই কীটনাশকের বোতল পুড়িয়ে আলামত নষ্ট করে। এতে ক্ষেতের ফলন বিপর্যয় হয়। দিন দিন উৎপাদন কমে যাচ্ছে অন্যদিকে যুগ্ম পরিচালক ঠিকই শ্রমিকদের উপস্থিতি দেখিয়ে বিল উত্তোলন করছেন। যুগ্ম পরিচালকের নিকটাত্মীয়ের কাছে কর্মরত দু'জন ডিএডি অসহায়। একটি সূত্র জানায়, যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল আলম ফার্মে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম হচ্ছে। অনেক আবাদি জমি এখন পতিত। এখানে অল্প শ্রমিক দিয়ে কাজ করালেও বেশি শ্রমিক দেখিয়ে বিল উত্তোলন করছেন। আবার স্থায়ী শ্রমিক দিয়ে কাজ না করিয়ে কিছু মৌশুমি শ্রমিক দিয়ে কাজ করান। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও আন্দোলন শুরু হয়। গত ১ জুলাই ফার্মের শ্রমিকরা চিৎলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সমাবেশ করেন ও যুগ্ম পরিচালকের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এ ব্যাপারে চিৎলা খামারের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল আলম জানান, নাজিম উদ্দীন তার নিকটাত্মীয় নন এবং কোনো নিম্নমানের সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। পোকা বালাইনাশকের পরিবর্তে অন্য কীটনাশক ব্যবহার এটা বাই মিসটেক ছাড়া কিছুই না। তবে শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।