ঝড়ে ভেঙেছে বিদ্যালয় ক্লাবের বারান্দায় পাঠদান
প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘর পড়ে যাওয়ায় পাঠদান চলছে একটি ক্লাবের বারান্দায়।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের হাটঘাটা গ্রামে ২০০২ সালে অনগ্রসর এলাকার শিক্ষার আলো বিস্তারের লক্ষ্যে মোস্তফা কামালের উদ্যোগে নিজস্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘ প্রায় ২ যুগ সুনামের সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পাঠদান ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও ৪ চালা একটি টিনের ঘরে পাঠদান কর্মসূচি চলে আসছিল। এর মাঝে জীর্ণদশা হলে একবার টিনের ঘরটি সংস্কার করা হয়েছে ব্যক্তিগত অর্থায়নে। সদ্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ঘরটি পড়ে যায়। ঘরের মধ্যে পাঠদান তো দূরের কথা প্রবেশই করার মতো অবস্থা নেই। রেমালের আঘাতে ঘর পড়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের অফিসের কোনো অস্তিত নাই। বিদ্যালয়ের কাগজপত্র শিক্ষকের বাড়িতে রাখা হয়েছে। পাঠ চলছে গাছতলা খোলা আকাশের নীচে। বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদের বারান্দায় পাঠদান করে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের বসার কোনো ব্যবস্থা নাই। শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলন হয় না। মাঝে মাঝে ক্লাবের সদস্যদের চোখ রাঙানী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হজম করতে হয়।
এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক রুখসান পারভীন বলেন, '২০০৭ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বিনা বেতনে কাজ করে আসছি। ২০১৩ সালে জাতীয়করণে বাদ পড়ে এ বিদ্যালয়টি। বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন এবং শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী আছে। পাঠ্যক্রম চলছে প্রাথমিকের সরকারি নিয়মানুসারে। একটি টিনের ৪ চালা ঘর থাকলেও বর্তমানে সেটা ঝড়ে পড়ে গেছে। খোলা আকাশে অথবা গাছের নীচে বা পাশের ক্লাবের বারান্দায় পাঠদান চলছে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন দ্রম্নত ঘরটি মেরামত করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ করে দেবেন।'
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল বলেন, 'চেষ্টা করছি বিদ্যালয়টি দাঁড় করার জন্য। চেষ্টা অব্যাহত আছে।' উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, 'সরকারের নির্দেশনা আছে যেখানে শিক্ষা আছে সেখানেই বই বিতরণের। আমরা সেভাবেই চাহিদা মতো বিদ্যালয়টিতে বই দিয়ে থাকি এর বাইরে কিছুই করার নাই। যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনকৃত নয়।' উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনিক জানান, 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনকৃত নয় সেহেতু বিদ্যালয়ের ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি পর্যায়ে কতটুকু সাহায়্য সহযোগিতা করা যায় বিষয়টি দেখা যাবে।'
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মাদ মুরাদুজ্জামান বলেন, 'যেহেতু আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং শিক্ষা কমিটির সভাপতি সে হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির খোঁজখবর নিয়ে যা করার দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'