সরকারি নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৬৮ জন মেডিকেল অফিসার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর এ পরীক্ষা হওয়ার পর প্রশ্নফাঁসসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় তারা তদন্ত শেষ করতে পারেনি।
প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, প্রশ্নফাঁসের তদন্ত চতুর্থ ধাপ পর্যন্ত গিয়ে থেমে আছে। কারণ সব পরীক্ষা বাতিলের পথে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে যেসব পরীক্ষা হয়েছে সব বাতিল হয়ে গেছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অনুমোদন নেওয়া হলেও এতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে নতুন করে আবার নিয়োগ দেওয়া হবে।
এদিকে বিএসএমএমইউতে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, পত্রিকা ও বেসরকারি টেলিভিশনে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণে আবেদন থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশন সব কিছুতেই অনিয়ম ঘটেছে। বিজ্ঞপিতে অনলাইনে আবেদনের বিষয় উলেস্নখ থাকলেও অফলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও তা না করে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণে ছিল নিয়োগ কমিটি। কমিটির সদস্যরা পেনড্রাইভের মাধ্যমে প্রশ্ন চুরি করে তা চাকরিপ্রত্যাশীদের অর্থের বিনিময়ে সরবরাহ করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১০টি করে প্রশ্ন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রশ্ন রাখা হয় নিয়োগ কমিটির সভাপতি ডা. ছয়েফ উদ্দিনের কাছে।
অভিযোগ ওঠে, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের দেওয়া প্রশ্ন থেকে প্রশ্নফাঁস চক্র ৩০০ প্রশ্ন প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেন এবং তা চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিতরণ করেন। মডারেশন বোর্ডের সদস্যরা ৩০০ প্রশ্ন থেকে ১০০ প্রশ্ন বাছাই করেন এবং ওই প্রশ্নেই পরীক্ষা নেওয়া হয়।