স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত প্রিয় কমিউনিটি ক্লিনিক। বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক এখন সারাবিশ্বে সমাদৃত।
শনিবার সকালে নীলফামারীর সংগলশীতে সঞ্জিব-মালতী কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নীলফামারী জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও রংপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের ৫০ শয্যা হাসপাতালগুলো ক্রমান্বয়ে একশ' শয্যায় উন্নীত করা হবে। নীলফামারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জমি অধিগ্রহণ সমস্যার সমাধান হয়েছে। খুব শিগগিরই অন্যান্য সমস্যা সমাধান করে দ্রম্নত নীলফামারী মেডিকেল কলেজকে পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু করা হবে। সেই সঙ্গে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়া নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, জনবল পদায়ন এবং নতুন ভবনের আসবাবপত্রের চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ প্রদান করা হবে।
২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর একটি ঘোষণা ছিল দেশের জেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে স্থাপন করা হবে আইসিইউ এবং কার্ডিওলজি ইউনিট। চার বছরেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি- এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, 'আমরা চেষ্টা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।'
উদ্বোধন শেষে সঞ্জীব-মালতী কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করে সেখানে নিজের বস্নাড প্রেসার চেক করান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এরপর কমিউনিটি ক্লিনিক প্রাঙ্গণে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।
এ সময় নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য বিভাগের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. এবিএম আবু হানিফ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক মো. এনামুল হক, সিভিল সার্জন ডা. হাসিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফারুক আল মাসুদ, পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোজাম্মেল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুজার রহমান, সংগলশী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান টিকেন্দ্রজীৎ রায় উপস্থিত ছিলেন।
সংগলশী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান টিকেন্দ্রজীৎ রায় স্বগীয় পিতা-মাতার নামে ক্লিনিকের নামকরণ করা হয়েছে। এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছালে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এদিকে খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, মন্ত্রী দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স ও ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। পাকেরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স পরিদর্শনে আসলে প্রশাসন, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় ও জেলা পুলিশ সদস্যরা মন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগ, এনসিডি কর্নার, লেবার ওয়ার্ড ও ওটি রুম পরিদর্শন করে চত্বরে বৃক্ষরোপণ করেন। এই সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এনসিডি কর্নারে বস্নাড প্রেসার চেক করেন। খানসামা সদরে ২০২১ সালে উদ্বোধন হওয়া হাসপাতালে সেবা কার্যক্রমে বন্ধের বিষয়টি অবগত হয়ে এটি দ্রম্নত সময়ে চালুর আশ্বাস দেন তিনি।
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দুপুরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স পরিদর্শনকালে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। এ কারণে আমি সারাদেশ ঘুরছি। আমাদের একটা আইডিয়া হয়েছে। আমি ঢাকায় ফিরে এসব বিষয়ে সমাধান করার চেষ্টা করব। সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে চিকিৎসক এবং কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে বলেও তিনি জানান।'
এরপর মন্ত্রী ঠাকুরগাঁও জেলার ডায়াবেটিক হাসপাতাল উদ্বোধন ও জেলা সদরের সরকারি/বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিক পরিদর্শন করেন।
বিকালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স পরিদর্শনসহ সন্ধ্যায় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে পঞ্চগড় সার্কিট হাউজে মতবিনিময় করেন।