শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙনে গৃহহীন শতাধিক পরিবার

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
যমুনার নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের হাটপাঁচিল গ্রাম -যাযাদি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত দুই সপ্তাহের ভয়াবহ ভাঙনে শাহজাদপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাঁচিল, জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, খুকনী ইউনিয়নের আরকান্দী এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর বন্যার পানি যমুনা নদীতে বেড়েই চলেছে। গত কয়েক দিনের ভাঙনে ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি ভেঙে বাস্তুহারা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই না পাওয়ায় সড়ক, মহাসড়ক কিংবা কোনো উঁচু স্থানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পাউবো সূত্রে জানা যায়, জুন মাসের শুরুতে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে এবং গত ১৮ জুন থেকে আবারও বাড়ছে যমুনার পানি। এদিকে জালালপুর, কৈজুরী ও খুকনী ইউনিয়নের যমুনা অধ্যুষিত এলাকায় কয়েক বছর ধরেই নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সব এলাকায় ভাঙনও বেড়ে যায়। ভাঙনকবলিত এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর তীরবর্তী এলাকায় কাজের নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করায় দেখা দিয়েছে এই নদী ভাঙন। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের গাফিলতিকেই দুষছেন স্থানীয়রা। তাই এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ভাঙনকবলিত এলাকাবাসীর। জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য মহির উদ্দিন জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এবার বর্ষার আগে থেকেই ভাঙছে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েকদিনে বেশ কিছু ফসলি জমি এবং বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে, ভাঙন থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি প্রদক্ষেপ নিতে হবে। কৈজুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন জানান, গত দুই সপ্তাহের ভাঙনে হাটপাঁচিল গ্রামের সিংহভাগ নদীগর্ভে। যে কোন মুহূর্তে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে গ্রামটি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, জালালপুর, কৈজুরী এবং খুকনি ইউনিয়নে নদী ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। আপাতত ওই ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও টিউব ফেলা শুরু করা হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, 'আমরা ইতিমধ্যে নদী ভাঙনে ৩টি ইউনিয়ন ও বন্যাকবলিত ২টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ১১ মেট্রিক টন চাউল বিতরণ করেছি। পরবর্তীতে আরও তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বরাদ্দ বাড়িয়ে বিতরণ করা হবে।'