নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ৭০০ একর জমি জোর করে দখলের অভিযোগ উঠেছে। জায়গাটি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা সমুদ্র বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক সম্পদ ইউনিস্টিটিউট স্থাপনের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। দখলদাররা ওই জায়গায় প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা সমুদ্র বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক সম্পদ ইনস্টিটিউটের সাউনবোর্ড থাকার পরও সেখানে ভেকু মেশিন দিয়ে দিনরাত মাটি কেটে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে একজন কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল কোম্পানি ও অপরজন মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। ওই জায়গায় ভূমিহীন কৃষকদের ফসল নষ্ট করে এরই মধ্যে তারা এক সঙ্গে প্রায় অর্ধশতাধিক পুকুর খননের কাজ করে চলছে।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ভূমিদসু্যদের বিরুদ্ধে উপজেলার চরলক্ষ্ণী গ্রামে প্রতিবাদ মিছিল করে ভূমিহীন নদীভাঙা মানুষ। এ সময় এলাকাবাসী ও ভূমিহীনরা অভিযোগ করে বলেন, কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল কোম্পানি ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ গত দুই সপ্তাহ ধরে ৩০ থেকে ৪০টি ভেকু মেশিন দিয়ে ৭শ' একর জায়গাজুড়ে প্রজেক্ট করার কাজ শুরু করে।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল কোম্পানি খাসজমি দখলের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, 'এ জায়গার মালিক শাহজাহান নামে এক প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমাকে পাওয়ার দিয়েছেন জায়গাটি দেখাশোনার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা হলে তারা জায়গা নিয়ে যাবে।'
মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'আমি জমি দখলের সঙ্গে জড়িত নেই। তবে এটা আমাদের নৌকা মার্কার প্রার্থীর নির্বাচনী ইশতেহার ছিল আমরা জনগণের জমি জনগণকে বুঝিয়ে দেব।' আগে এসব জায়গা তাদের লোকজনের ছিল বলেও দাবি করেন সাবেক এ চেয়ারম্যান।
উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অশোক বিক্রম চাকমা বলেন, 'অবৈধ দখলের অভিযোগ পেয়ে দুই দফা অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ১১টি মাঠি কাটার ভেকু মেশিন জব্দ করে কয়েকটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড এবং লাল পতাকা উত্তোলন করে দেওয় হয়। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।'
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিদার-উল-আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, 'ওই জায়গা শেখ হাসিনা সমুদ্র বিজ্ঞান ও সামুদ্রিক সম্পদ ইনস্টিটিউটের প্রস্তাবিত স্থান। ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত ভূমিতে অবৈধভাবে কোনোরূপ স্থাপনা নির্মাণসহ অবৈধভাবে দখল আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। উক্ত জমি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'