কৃষিই যখন কৃষকের ভরসা তখন নকল ধানের বীজে প্রতারিত হচ্ছেন বগুড়ার নন্দীগ্রামের কৃষকরা। কথায় আছে ভালো ফলন পেতে হলে ভালো বীজ রোপণ করতে হবে। কিন্তু সেই বীজই যদি নকল বা নিম্নমানের হয় তবে যতই পরিচর্যা করা হোক না কেন সেই বীজ থেকে ভালো ফলন আশা করা যায় না। আর বাজারে চাকচিক্য ভরা প্যাকেট দেখিয়ে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে এসব নকল বীজ।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বেশিরভাগ বীজ বিক্রি করা দোকানগুলোতে নকল ও নিম্নমানের বীজ বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এসব নকল বীজ বিক্রি করার ফলে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এই উপজেলার সাধারণ কৃষকরা। শষ্যভান্ডার হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে বগুড়া জেলার এই নন্দীগ্রাম উপজেলা। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রোপা আমন ধান লাগানোর কাজ শুরু হবে। এদিকে রোপা আমনের জন্য সাড়ে ৮শ' হেক্টর জমিতে ব্রি-৩৪,৪৯,৫১,৭৫,৮৭,৯০,৯৫, বিনা-৭, বিনা-১৭ স্বর্ণা, মিনিকেট, কাটারিভোগ ও হাইব্রিড-১০৩ জাতের বীজতলা ফেলেছেন কৃষকরা। তবে এসব ধানের বীজের মধ্যে বেশিরভাগ কৃষকরা ব্রি-৪৯ জাতের বীজ বপন করে থাকেন। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন বীজের দোকান ঘুরে দেখা গেছে সরকারি বীজের পাশাপাশি বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির বীজ বিক্রয় করা হচ্ছে। যাদের নেই কোনো সরকারি বীজ প্রত্যয়নকারী সংস্থার সনদ। এ ছাড়া অনেক সার-কীটনাশক দোকান মালিকরা বাজার থেকে নিম্ন্নমানের ধান ক্রয় করে এবং তা নিজেই নিজেদের মতো করে সেগুলো ধান চমকপ্রদ প্যাকেট করে কৃষকদের নয়ছয় বুঝিয়ে অধিক দামে বিক্রয় করছেন এসব বীজ। আর কৃষকরা এসব বীজ কিনে প্রতারিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের এক কৃষক জানান, 'আমি ব্রি-৪৯ জাতের বীজ কিনেছিলাম কিন্তু দুঃখের বিষয় ভেজাল বীজ হওয়ার কারণে আমার ধানে কোনো ট্যাক গজায় নাই।'
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন কৃষক জানান, উপজেলার অর্ধশত স্থানে লাইসেন্স বিহীন ডিলাররা বেপরোয়াভাবে সরকারি নির্ধারিত মূল্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের ইচ্ছামত উচ্চ মূল্যে এসব বীজ বিক্রয় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, বিভিন্ন বাজারে এসব নকল বীজ বিক্রয় করার কথা শুনেছি এবং সরেজমিনে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।