টাঙ্গাইলের সদর উপজেলায় চারাবাড়ি ব্রিজের সংযোগ সড়ক ভেঙে পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বুধবার ভোরে টাঙ্গাইল-তোরাপগঞ্জ সড়কের চারাবাড়ি নামক স্থানে ধলেশ্বরীর নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কাতুলী, হুগড়া, কাকুয়া, মাহমুদ নগর ও নাগরপুরের ভাড়রা ইউনিয়নে যাতায়াতের জন্য টাঙ্গাইল-তোরাপগঞ্জ সড়কে ধলেশ্বরী নদীর ওপর চারাবাড়িঘাটে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিগত ২০০৬ সালে ১৭০.৬৪২ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করে। ব্রিজটি নির্মাণের পর নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে কয়েকবার পূর্ব ও পশ্চিম তীরের অ্যাপ্রোচ ধসে যায়। পরে এলজিইডি স্থানীয়দের সহায়তায় বালুর বস্তা ও লোহার পাত দিয়ে সাময়িক সংস্কার করে।
এলাকাবাসী জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজ দিয়ে চরাঞ্চলের পাঁচটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া সন্তোষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক। এদিকে চরাঞ্চলের কৃষিপণ্য, তাঁত শিল্পের কাঁচামাল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আনা-নেওয়া করতে ওই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক, অটোভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করে থাকে।
যানবাহন চালক আব্বাছ আলী, ময়েন উদ্দিন, হাসমত করিম, শহিদুল জানান, গত কয়েকদিন ধরেই একটু একটু করে পানির নিচে ধস নামে। বুধবার ভোরে যাত্রী নিয়ে এসে তারা দেখতে পান সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। পরে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ভাঙনের দৃশ্য দেখছেন। সংযোগ সড়ক সংস্কারে দ্রম্নত বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে তারা ওই ব্রিজ দিয়ে গাড়ি চালাতে পারবেন না।
কাতুলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুমন দেওয়ার জানান, নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানির চাপ বেড়ে ব্রিজের পশ্চিম পাশের অ্যাপ্রোচসহ সংযোগ সড়ক ও কয়েকটি বাড়িতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রম্নত পদক্ষেপ না নিলে এ ব্রিজ ভেঙে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা জানান, সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও প্রবল স্রোতের কারণে ব্রিজের সংযোগ সড়ক ধসে যাচ্ছে। যেহেতু সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ, তাই দ্রম্নত চারাবাড়িঘাট ব্রিজের ঢালে ধস বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে ইঞ্জিনিয়ার পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ব্রিজ ও সড়কটি যেহেতু এলজিইডির। তাই এলজিইডির প্রকৌশলীকে অবগত করা হয়েছে। দ্রম্নততম সময়ে দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।