কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নদে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে বেড়েছে ভাঙন। নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় গাছ ও বাঁশ দিয়ে স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি করা ৬০টি বান্ডালও ভেসে গেছে পানির স্রোতে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি, গাছপালা, রাস্তা ও ৪ শতাধিক বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে আরও শতাধিক বসতভিটা। ভাঙন ঠেকাতে দ্রম্নত ব্যবস্থা না নিলে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী।
সরেজমিন দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদে পানির স্রোতের সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদের তীরের বাসিন্দাদের অনেকেই নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ নদে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় গাছপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে অনেক গাছপালা ভেঙে নদের পানিতে পড়েছে। গ্রামগুলোয় চলছে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কর্মযজ্ঞ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যমতে, গত ১০ দিনের ব্যবধানে নয়ারহাট ইউনিয়নের উত্তর খাউরিয়ার চরে ভাঙনে ৪৯টি, খেরুয়ার চরে ৬টি, অষ্টমীর চর ইউনিয়নের খোদ্দ বাঁশপাতার এলাকায় ৭৫টি, নটারকান্দি এলাকায় ৫০টি ও চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতি আবাসন প্রকল্পের ১২০ ঘরসহ ১৫০টি, মনতোলায় ২৭টি, গাজীরপাড়ায় ৩০টি, বিশারপাড়ায় ৫টি, তেলিপাড়া ও চড়ুয়াপাড়ায় ৩০টিসহ মোট ৪২২টি বসতবাড়ি নদে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বিভিন্ন এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ শত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত বৈদু্যতিক সাব-মেরিন ক্যাবল।
চিলমারী ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য সানজু মিয়া বলেন, নদের ভাঙনে দিশেহারা বিভিন্ন এলাকার তীরবর্তি মানুষ। শেষ সম্বল টুকুও সরানোর সুযোগ পাচ্ছে না অনেকইে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে চিলমারী ইউনিয়নটি বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল মিয়া, জামাল হোসেন, মোখলেছুর বলেন, শুকনো মৌসুমে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় ও স্থানীয়দের সহায়তায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঠেকাতে গাছ ও বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ৬০টি বান্ডাল তৈরি করা হয়েছিল। নদে পানির স্রোতে সেগুলোও ভেসে গেছে।
চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে চিলমারী ইউনিয়ন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সাবমেরিন ক্যাবলটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে আক্ষেপ করেন তিনি।