'ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে দুর্নীতির সম্পর্ক নিবিড়'

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

গাজীপুর প্রতিনিধি
ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে দুর্নীতির সম্পর্ক নিবিড় বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে 'দুর্নীতি ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ-গঠন সম্বন্ধে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্য' শীর্ষক বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রথম বক্তৃতায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় এসব কথা বলেন তিনি। প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ তার প্রবন্ধে বলেন, 'দুর্নীতি বহুল আলোচিত একটি বিষয়। উন্নত-অনুন্নত, গণতান্ত্রিক-অগণতান্ত্রিক সব সমাজে এটি বিদ্যমান। ক্যানসারের মতো এটি সম্পূর্ণ নিরাময় করা না গেলেও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভেদে এর মাত্রা বা পরিধি সীমিত রাখা সম্ভব। দুর্নীতির সঙ্গে রয়েছে ক্ষমতার নিবিড় সম্পর্ক। ক্ষমতাবান ছাড়া কারো পক্ষে বড় ধরনের দুর্নীতি করা সম্ভব নয়। 'ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতিতে প্ররোচিত করে। আর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা সর্বগ্রাসী দুর্নীতির জন্ম দেয়' (লর্ড এস্টন)। দুর্নীতির অর্থ শুধু আর্থিক লেনদেন নয়, এর সংজ্ঞা বা পরিধি ব্যাপক। যে কোনো অনিয়ম, অসৎ আচরণ, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়াও দুর্নীতি। তিনি আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধু মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন, শুধু আবেদন-নিবেদন কিংবা গুলি করে হত্যা করার মতো আইন পাস করেও দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণজাগরণ ও দুর্নীতির উৎসমূলে আঘাত হানা। ১৯৭৫ সালের তার দ্বিতীয় বিপস্নব বা সিস্টেম চেইঞ্জ কর্মসূচির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল তাই। শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যক্তিগত সততা দুর্নীতি দমনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে যে পারে না বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা তারই প্রমাণ। এজন্য প্রয়োজন আইনের শাসন, কোনো দুর্নীতিবাজকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়া, বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, স্বাধীন গণমাধ্যম, শক্তিশালী বিরোধী দল, প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান কাঠামো গঠন ও এদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা।' বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি প্রফেসর ড. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোলস্না মাহফুজ আল-হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট এবং সিন্ডিকেট সদস্যরা, অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।