চারঘাটে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখায় তিন ফার্মেসিকে জরিমানা
বাগেরহাট ও কালিয়াকৈরে তিন ব্যবসায়ীর জরিমানা ৩ জেলায় কারেন্ট ও চায়না দোয়ারী জাল জব্দ
প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
রাজশাহীর চারঘাটে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অপরাধে তিন ফার্মেসিকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপরদিকে বাগেরহাট ও কালিয়াকৈরে ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও ৩ জেলায় কারেন্ট ও চায়না দোয়ারী জাল জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি জানান, চারঘাটে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অপরাধে তিন ফার্মেসিকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার দুপুরে উপজেলার চারঘাট বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন এই অভিযান চালান। অভিযান চালিয়ে সারদা ও চারঘাট বাজারে ডালিম ফার্মেসি ৫ হাজার, নুর ফার্মেসি ৫ হাজার ও প্রীতম ফার্মেসি ১ হাজার, মোট ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন। এসময় ছিলেন ওষুধ তত্ত্বাবধারক রাজশাহী জেলা শরিফুল ইসলাম, উপজেলা ভূমি ভারপ্রাপ্ত কানুনগো আবদুলস্নাহ আল মাসুম, সার্টিফিকেট রেজিস্টার লোমানুর রহমান, চারঘাট মডেল থানা পুলিশ সদস্যবৃন্দ। জনসম্মুখে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিনা লাইসেন্সে বাগেরহাটে নকল ব্যান্ড রোল ব্যবহার করে সোনালি বিড়ি তৈরির অপরাধে মেসার্স নিপা বিড়ি কোম্পানিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদরপ্ত বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক আব্দুলস্নাহ আল ইমরান সোমবার বিকালে মোলস্নাহাট উপজেলার কুলিয়া বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে কোম্পানিকে এ জরিমানার আদেশ দেন। অভিযানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং জেলা পুলিশের একটি টিম সার্বিক সহায়তা প্রদান করেন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক আব্দুলস্নাহ আল ইমরান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন নকল ব্যান্ড রোল ব্যবহার করে সোনালি বিড়ি তৈরির অপরাধে মেসার্স নিপা বিড়িকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৫০ ধারায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি স্বেচ্ছায় পরিশোধ করেন। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান পুনরায় এই ধরনের অনিয়ম করা থেকে বিরত থাকবেন বলে অঙ্গীকার করেন। এ সময় জব্দ করা ৬১ হাজার ৫৫০ পিস নকল সোনালি বিড়ি স্পটে ধ্বংস করা হয়।
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর বাজারে বিভিন্ন দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দুই দোকানিকে ৫১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক কাউছার আহাম্মদ জানান জনসাধারণের চলাচলেন জন্য ফুটপাতে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু কয়েক দিন পার না হতেই আবারও ওই স্থানে কিছু লোক দোকান বসিয়ে ব্যবসা শুরু করে। এজন্য এসব অবৈধ দোকান পুনরায় উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আইন অমান্য করার অপরাধে কয়েক জনকে আটক করা হয়। কিন্তু বাজার বণিক সমিতির লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে কথা দেয় ফুটপাতে আর কোন দোকান এরা উঠাবে না। এজন্য অবৈধ দোকান উচ্ছেদের পর পুনরায় ওই স্থানে দোকান বাসানোর অপরাধে কালাম মিয়া নামের এক দোকানদারকে এক হাজার ও ভেজালপণ্য বিক্রির অপরাধে লাবণী স্টোর-১ ও লাবণী স্টোর-২ এর মালিক কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অন্যদের বণিক সমিতির জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। কাউকে ফুটপাত দখল করে দোকান বসিয়ে জন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে দেব না, এছাড়া খাদ্যে ভেজাল, ওজনে কারচুপির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। এ সময় ছিলেন খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের (বিএসটিআই) সিনিয়র পরীক্ষক মো. কামরুল পলাশ, ইন্সপেক্টর আবিদ হাসনাত, কালিয়াকৈর থানা পুলিশ,উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীসহ অন্যান্যরা।
নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়া বিভিন্ন মৎস্য এলাকা থেকে ও সদর ইউনিয়নের নদী এলাকা থেকে ১০০ সেট চায়না দুয়ারি জাল, ২টি কোনা বেড় জালসহ আনুমানিক ৫ লাখ টাকার জাল পুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এ অভিযানটি নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া আক্তার, নিকলী সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম, থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে সোমবার দুপুরের দিকে ম্যাজিক জাল ধরে। পরে প্রশাসন জনসম্মুখে সেই জালগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে।
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, খুলনার পাইকগাছা পৌর সদরের বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ এবং দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এর আওতায় মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীনের নেতৃত্বে উপজেলা মৎস্য দপ্তর থেকে পৌর সদরের বিভিন্ন দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় আনুমানিক ৫০ হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এছাড়া দুই ব্যবসায়ীর একজনকে ৫ হাজার এবং আরেকজনকে ৩ হাজারসহ মোট ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জব্দকৃত কারেন্ট জাল থানার সামনে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এ সময় ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মলিস্নক, মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা কাওসার আকন, ক্ষেত্র সহকারী রণধীর সরকার, মৃদুল সরকার ও পেশকার মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
শেরপুর প্রতিনিধি জানান, শেরপুর সদর উপজেলার মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এর আওতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। মঙ্গরবার দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করেন শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুলস্নাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঈফফাত জাহান তুলি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন উপজেলা সিনিযর মৎস্য কর্মকর্তা মমতাজুন্ন নেছা ও সদর থানা পুলিশ।