শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

এক উপজেলার প্রকল্প অন্য উপজেলায়

ইমরান হোসাইন লিখন, বগুড়া
  ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
এক উপজেলার প্রকল্প অন্য উপজেলায়

প্রায় ৫৭টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমতি হয় বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়। হঠাৎ সেই বরাদ্দ স্থানান্তর করা হয়েছে সারিয়াকান্দিতে। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই স্থানান্তর হয়। ৫৫ লাখ টাকা এবং চাল-গম মিলে ৩৬ মেট্রিকটন খাদ্য। এতে সোনাতলার মানুষ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হলো। বিষয়টি নিয়ে সোনাতলার উপজেলার সাধারণ মানুষ মিশ্রপ্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

তবে এই আসনের সাংসদ সাহাদারা মান্নান শিল্পী বলেছেন অন্য কথা। তিনি বলেন, 'দুটি উপজেলাই আমার যেখানে মন চাইবে সেখানেই করব।'

সারেজমিন এমন বহু প্রকল্পের কাজ চোখেই পড়েনি। খোঁজ নিলে বলা হয় কাজ শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। অথচ বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ শেষের নির্ধারিত মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা ব্যক্তিগত স্বার্থে এক জায়গার বরাদ্দের কাজ অন্য জায়গায় করেছেন। সোনাতলার পাকুল্যা ইউনিয়নের মধ্যে একটি গ্রামীণ সড়কে স্কেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের কাছে প্রকল্পটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখানে কোনো প্রকল্প নেই। নিজের থেকে মাটি কেটে দিলাম দেখি কোনো প্রকল্পের মধ্যে দেওয়া যায় কিনা।'

অনুসন্ধানে জানা যায়, সোনাকানিয়া দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদের উন্নয়নের নামে বরাদ্দ ছিল ৫৩ হাজার টাকা। ওই প্রকল্পের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমরা বরাদ্দের কোনো টাকা পাইনি।'

সোনাতলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন, 'সোনাতলা উপজেলার রশিদপুর মিফতাহুল কওমি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও ইয়াতিম খানার গেট এবং প্রাচীর নির্মাণের টাকা অন্য কেউ বিল ভাউচার দিয়ে তুলে নিয়েছেন। আমি সরেজমিন কাজ দেখতে গিয়ে দেখি কোনো কাজ হয়নি। অন্য কেউ টাকা তুলে নেওয়ার বিষয়টি তখন আমার কাছে ধরা পড়ে। এ ছাড়া সোনাতলা রেল কলোনির হরিজন দুর্গা মন্দির উন্নয়ন, বালুয়াহাট ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, হরিখালি যুব সংঘ এবং হরিখালি ইসলামীয়া যুব সংঘে ফার্নিচার ক্রয়ের বরাদ্দ ছিল, সেখানে কিছুই কেনা হয়নি, জোড়গাছা যুব সংঘ নামের প্রকল্প ছিল সেখানে সেই সংঘের অস্তিত্ব নেই।'

ওদিকে স্থানান্তর হওয়া ৫৭ প্রকল্প সারিয়াকান্দিতে যাওয়া মাত্রই প্রাথমিক অর্থ ছাড় পেয়েছে প্রকল্পের সভাপতিরা। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, 'বরাদ্দগুলো একান্ত সাংসদের। তিনি তার মর্জি মতো যেকোনো উপজেলায় কাজ করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংসদ সদস্যদের নির্দেশ মোতাবেক বাস্তবায়ন করবেন মাত্র। এর চেয়ে বেশি জানার জন্য তিনি সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে