বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত শায়েস্তাগঞ্জের বাঁশবাজার, হারাচ্ছে ঐতিহ্য

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
টানা বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শাহজীবাজার সুতাংয়ের ঐতিহ্যবাহী বাঁশবাজার। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নূরপুর ইউনিয়নের সুতাং নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত শাহজীবাজার সুতাংয়ের বাঁশবাজার। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শাহজিবাজার সুতাং, সুরাবই, পুরাসুন্ধ্যা, নূরপুর, শৈলজুড়া, ব্রাহ্মণডুরা, দাউদনগর, বিরামচর, জগন্নাথপুর, পশ্চিমবড়চর, বছরতপুর, এলাকার গ্রামে প্রচুর পরিমাণে বাঁশ রয়েছে। আর এসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বাঁশ কেনাবেচা করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। শাহজীবাজার সুতাংয়ে সাধারণত সপ্তাহে দুই দিন রবি ও বুধবারে হাট বসে। তবে স্থানীয় পাইকাররা শনিবার ও মঙ্গলবার বাজারে বাঁশ কিনে থাকেন। হবিগঞ্জ জেলা ছাড়াও অন্যান্য জেলার মানুষ ও বাঁশ কিনতে সুতাং বাজারে আসেন। প্রতিবারের মতো গেল ঈদুল আজহার গরুর হাটও সুতাং বাঁশ বাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে করে হাজারো মানুষ ও খুঁটি গেড়ে গরু বাজারে তোলার কারণে বাঁশ বাজারের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে, আর এসব স্থানে বৃষ্টির পানি আটকে হয়েছে জলাবদ্ধতা। এছাড়াও সুতাং নদীর ব্রিজের সঙ্গে বাঁশবাজারের ড্রেনটিও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি আটকে থাকে। সেজন্য বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের প্রতিনিয়তই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জানা যায়, বছর খানেক সুতাং বাঁশবাজারে বেশ কিছু মাটি ফেলে উঁচু করা হয়েছিল। এরপরে আর বাঁশ বাজারের কোনো উন্নয়ন করা হয়নি। অন্যদিকে এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সংযোগ সেবা চালু রাখার জন্য প্রতিনিয়তই বাধ্য হয়ে মানুষজন বাঁশ দেদার কেটে ফেলছেন। তাই এসব এলাকায় আগের চেয়ে বাঁশের সংখ্যা কমে গেছে। অথচ একসময় সুতাং বাজারে বাঁশের তৈরি কুলা, ডালা, খাচা, দাড়ি, চাটি পাটিসহ হরেকরকম আসবাবপত্র পাওয়া যেত। এখন এগুলো একদমই কমে আসছে, এমন বাস্তবতায় বাঁশ বাজার তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। সুতাং বাজারের বাশ ব্যবসায়ী ইসমাইল মিয়া জানান, বাঁশবাজার কর্দমাক্ত হওয়ার কারণে অনেক মানুষ বাজারে বাঁশ নিয়ে আসতে চান না। এছাড়া পাইকাররাও আসতে চান না। তিনি বাঁশ বাজারে মাটি ফেলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চান। সুতাং বাজারের বাঁশ শ্রমিক রংগুই মিয়া বলেন, বাঁশ কাঁধে নিয়ে প্রতিনিয়তই গাড়িতে ওঠাতে হয়। জল আর কাদায় মাটি একাকার হওয়ার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। তিনিও বাঁশ বাজারের উন্নয়নের দাবি জানান। এ ব্যাপারে নূরপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, বছর খানেক আগে হবিগঞ্জের সাংসদ আবু জাহির এমপি খাবিকার একটি প্রকল্প থেকে বাঁশ বাজারের উন্নয়নের জন্য একটা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। তখন বেশ কিছু কাজ হয়েছিল। বর্তমানে পুরো বাজারের ড্রেনের পানি এ বাঁশ বাজারে আসে। সেই সঙ্গে ড্রেনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'আমি সুতাং বাঁশবাজার রক্ষার জন্য বাজারে গাইডওয়াল নির্মাণের দাবি সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে জানাচ্ছি এবং আমার কাছে সুযোগ আসলে সুতাং বাঁশ বাজারে উন্নয়নের জন্য কাজ করব।'