শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

মিরসরাইয়ে খাল দখল করে দীঘি খনন

খালের শ্রেণি পাল্টে মাছ চাষ তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খালের জায়গা দখল করে দীঘি খনন করায় অল্প বৃষ্টিতেই পানিতে ডুবছে ঘরবাড়ি -যাযাদি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ইছাখালী ইউনিয়নের চুনি মিঝির টেক এলাকায় অবৈধভাবে খালের জায়গা দখল করে মাছ চাষির জন্য দীঘি খনন করেছে প্রভাবশালীরা। এলাকাবাসীরা প্রতিবাদ করলে জায়গা বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছে তারা। এতে তিন শতাধিক পরিবার প্রায় ১০ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। পানির কারণে দুই বেলা রান্না করে খাওয়া-দাওয়া কঠিন হয়ে গেছে তাদের। কেউ কেউ রাতে থাকার জন্য আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খাস জমি দখল করে অনেক দিঘি খনন করেছে। আবার কেউ কেউ সড়কের পাশে ও ফসলি জমি কেটে এই দিঘি খনন করছে। পানি চলাচলের একমাত্র খাল দখল করে রেখেছে তারা। সামন্য বৃষ্টি হলে পানি চলাচলের কোনো জায়গা থাকে না। এলাকার অধিকাংশ পরিবারের ঘরে ডুকে যায় এই বৃষ্টির পানি।

স্থানীয়দের অভিযোগ ইয়াছিন, হারুন, সুজন, নাজিম, মূসা, কামরুল, আজগর, রসূল আহম্মদসহ অনেকের দিঘি রয়েছে এই জায়গা। তারা পানি চলাচলের জন্য কোন ধরনের জায়গা রাখেনি। একমাত্র পানি চলাচলের কোম্পানি নগর নামে খালটি শ্রেণি পাল্টে ছোট করে ফেলেছে। এতে বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে।

পানিবন্দি হয়ে থাকা নাছিমা জানান, প্রায় ১০ দিন ঘরে পানি। তার দুই সন্তান এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ঠিকমতো সন্তানদের খাওয়া দিতে পারে না। টিউবলের পানি উঠে না। পানির জন্য এক কিলোমিটার হাঁটা লাগে। দিঘির পাশে বড় করে পানি চলাচলের জায়গা করলে পানি জমে থাকত না বলে জানান তিনি।

ষাটোর্ধ্ব বিবি ছকিনা জানান, আগে কখনো এই রকম পানি উঠত না। দিঘি খনন হওয়ার পর হালকা বৃষ্টি হলে ঘরে পানি উঠে যায়। দিঘির মালিকদের কিছু বলে তারা ঘরবাড়ি বিক্রি করে চলে যাওয়ার জন্য বলে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন বলেন, 'এই জায়গায় ৮৬ ফুট সরকারি খাস জায়গা ছিল। পানি চলাচলের জন্য অনেক বড় খাল ছিল। মাছ চাষিরা দিঘি খনন করে খালের জায়গাও দখল করে নিয়েছে। এখন পানি চলাচলের কোনো জায়গা নেই। খালের জায়গা উন্মুক্ত করে দিলে আর পানি জমে থাকবে না।'

এ বিষয়ে ইছাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তাফা বলেন, 'বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মাছ চাষিরা অবৈধভাবে দিঘি খনন করেছে। এ এলাকায় অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে কষ্ট করছে। আইনশৃঙ্খলা কমিটিকে কয়েকবার বিষয়টি বলেছি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।'

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, 'আমি নিজে এই এলাকায় গিয়েছি। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। অবৈধ দিঘি খননের কারণে পানি জমে থাকে।' দ্রম্নত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে