শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

হাওড়ের দেশীয় মাছ যেন সোনার হরিণ! সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে

হাওড়াঞ্চল প্রতিনিধি
  ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
হাওড়ের দেশীয় মাছ যেন সোনার হরিণ! সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, নিকলী, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, ইটনা, করিমগঞ্জ, হবিগঞ্জের আজমেরিগঞ্জ, লাখাই, বানিয়াচং, ব্রাম্মনবাড়িয়ার নাসিরনগর, সরাইলসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা নিয়ে বিস্তীর্ণ হাওড়াঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলছে। এক সময়ে এ হাওড়াঞ্চলের উপজেলাগুলোতে দেশীয় মাছ স্থানীয় খাদ্য চাহিদা পূরন করে জাতীয় পর্যায়ে বাজার বন্দরে বাজারজাতসহ পর্যাপ্ত মাছ বিদেশেও রপ্তানি করা হতো। এখন আর তা হয় না বললেই চলে এমনকি হাওড়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ সোনার হরিণ বললেও চলে।

একদিকে হাওড়াঞ্চলে এসব উপজেলাগুলোর সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় পুষ্টি সাধনে ব্যর্থ হচ্ছে, অন্যদিকে পুকুর বা খামারের মাছই এখন বাজার-বন্দর দখল করে ফেলেছে।

হাওড়পাড়ের একাধিক জেলে ও স্থানীয় লোকজন জানান, হাওড়াঞ্চল উপজেলায় ইতোমধ্যে অন্তত ৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছ বিলুপ্তির পথে। একসময়ে দেশের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত হাওড়াঞ্চলে এসব উপজেলাগুলোতে প্রকৃতিভাবেই ছিল অগনিত নদী, বিল পরিপূর্ণ ছিল। মিঠা পানিতে পরিপূর্ণ এ উপজেলায় প্রায় ২৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আর তা নেই।

নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস, খাল-বিল ভরাট করে করে তৈরি হচ্ছে স্থাপনাসহ বাড়িঘর, মাছের অভয়াশ্রমের পার্শবর্তী জমিগুলোতে কীটনাশকের ব্যবহারের কারণে হাওড়াঞ্চলে মৎস্য ভান্ডার উজার হয়ে যাচ্ছে বলে হাওড়পাড়ের লোকজন মনে করছেন।

বিলুপ্ত হওয়া প্রধান মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে নানিদ, মাশুল, পাঙ্গাশ, মাগুর, শিং, বাতাসি মাছ, গুং মাছ, রানী মাছ, পান মাছ, মৃগা মাছ, খৈলিশা মাছ, বৈয়চা মাছ, কানলা মাছ, বামট মাছ, পাপদা মাছ, বেংরা মাছ, সিলুন মাছ, খলা মাছ, লাচু মাছ, এলগন মাছ, রামচেলা মাছ, গিলাকানি নাপিত মাছ ও গলদা চিংড়ি।

কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, খামারের মাছই বাজার ভরপুর। নদী ও হাওড়ে দেশীয় প্রজাতীর মাছ মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলেও এগুলোর দাম অত্যন্ত চড়া এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। খামারের মাছের দাম আনুপাতিক হারে কম।

এ ব্যাপারে একাধিক মাছ বিক্রেতা জানান, দেশীয় প্রজাতীর মাছ খুবই কম পাওয়া যায় এবং দাম বেশি।

এই ব্যাপারে হাওড়াঞ্চলবাসী ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান কামরুল হাসান বাবু বলেন, 'ইজারাদারদের স্বেচ্ছাচারী মনোভাব ও অধিক মুনাফার কারণে অবৈধ জাল দিয়ে মা মাছ ও পোনা মাছ অবাধে নিধনের ফলে এমনটি হচ্ছে। যদি প্রজননকালীন সময় স্থানীয় প্রশাসন সঠিকভাবে নজর রাখে তাহলে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে