শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

মুভি-সিরিয়ালকেও হার মানায় যে ঘটনা!

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
  ০৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
মুভি-সিরিয়ালকেও হার মানায় যে ঘটনা!

সিরিয়াল, মুভি আর টিকটক দেখে চলত অপহরণের প্র্যাকটিস। বেশ কয়েকদিন প্র্যাকটিস শেষে কাজে নেমে পড়েন দুই বন্ধু হাবিব ও পলাশ। এক বন্ধু অপর বন্ধুকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে তার মায়ের কাছে পাঠানো হয় মুক্তিপণ পরিশোধের আকুতি জানানো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ। মুক্তিপণ পরিশোধে তাই ব্যাকুল হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন। তবে পুলিশের চৌকস তদন্তে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনীর বামন্দী বাজারের।

পলাশ গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে ও হাবিব একই গ্রামের মৃত মাসুমের ছেলে। পুলিশ ওই দুই বন্ধুকে আটক করে মুচলেকা নিয়ে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।

জানা গেছে, বামন্দী বাজারে পলাশের ওয়েল্ডিং কারখানায় কাজ করতেন তারই বন্ধু আহসান হাবীব। পলাশের নিজের দোকান থাকলেও হাবিবের ছিল না। পিতৃহারা হাবীব মায়ের কাছে ব্যবসার জন্য টাকা চাইলেও মায়ের সামর্থ্য ছিল না। মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতে দুই বন্ধু মিলে একটি অপহরণের নাটক করে। পলাশের ওয়েল্ডিং দোকানে বসে টিকটক, মুভি আর সিনেমা দেখে রপ্ত করে অপহরণ নাটকের।

সে অনুযায়ী গেল সোমবার সন্ধ্যায় পলাশ তার বন্ধু হাবিবের মায়ের কাছে খবর দেয় হাবিব অপহরণ হয়েছে। তাকে মুক্ত করতে হলে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। সাজানো নাটকের অংশ হিসেবে হাবীবকে কাপড় দিয়ে বেঁধে টাকা দেওয়ার আকুতি জানানো ভিডিও পাঠানো হয় মাসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের কাছে, যা দেখে প্রকৃত অপহরণ মনে করে দিশেহারা হয়ে পড়েন হাবীবের মাসহ আত্মীয়স্বজন। অপহরণের বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে।

গাংনী থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকস দল শুরু করে তদন্ত। ভিডিও বিশ্লেষণ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পলাশ ও হাবিবের অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে বামন্দী বাজারের একটি ঘর থেকে দু'জনকে আটক করা হয়। ব্যবসার টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে এই নাটক বলে স্বীকার করে তারা। আটক পলাশ ও হাবিবকে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, তথ্য প্রযুক্তি ছাড়াও ভিডিও বিশ্লেষণে অপহরণ নাটক বোঝা যায়। পরে দুই বন্ধুর মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়েই অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা সব স্বীকার করেছে। পরিবারের অসচেতনতা এবং তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারে যুবসমাজ বিপথে যাওয়ার চিত্রই ফুটে উঠেছে এই অপহরণ নাটকের মধ্যে। এমনটিই মনে করছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে