শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

কাশিয়ানীতে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা

কর্মকর্তা থাকেন ঢাকায়
কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
কাশিয়ানীতে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা

গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা মুখ থুবড়ে পড়ছে। থমকে আছে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি।

জানা গেছে, দীর্ঘ ৫ মাস কাশিয়ানী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে চলছে কোনো রকমের দায়সারা কাজ। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সহস্রাধিক শিক্ষক, অভিভাবক ও সেবাগ্রহীতা। প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ঢাকা) থেকে একজন শিক্ষা অফিসার পদায়নের আদেশ দেওয়া হয়। তিনি গত ১৯ মে যোগদান করেন। যোগদান করেই তিনি সংযুক্তিতে অফিস করছেন রাজধানীর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। আর সে কারণে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার দিয়ে কোনা রকমে দায়সারা গোছে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে কাশিয়ানী শিক্ষা অফিসের কাজ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলে শিক্ষকতা কররছন সহস্রাধিক শিক্ষক। ১৪টি ইউনিয়নে ৭টি ক্লাস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ৩০ হাজারের বেশি শিশু লেখাপড়া করছে। গত ৫ মাস ধরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার না থাকায় দৈনন্দিন কাজ ও শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিঘ্নিত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজ। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহা অফিসের কাজ করতে ব্যস্ত থাকায় নিজের ওড়াকান্দি ক্লাস্টারের খোঁজখবর নিতে পারছেন না। ওই ইউনিয়নের কয়েক হাজার শিশু প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিবাবকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

গত ১৮ জানুয়ারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার দাস অবসরজনিত পিআরএলে যান। সেই থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই ওড়াকান্দি ক্লাস্টারের স্কুলগুলো দেখ-ভাল করেন। ফলে উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তার ওই ক্লাস্টার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কার্যক্রমে চরম সমন্বয়হীনতার অভাব দেখা দিচ্ছে। এদিকে, সেবা নিতে আসা শিক্ষক ও কর্মচারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নিয়মিত পাচ্ছেন না। এতে শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় সেবা গ্রহীতাদের।

এদিকে ৮ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোবাখখারুল ইসলাম মিজানকে কাশিয়ানী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে বদলির আদেশ জারি এবং একই চিঠিতে তাকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্তি দেওয়া হয়।

আদেশ পেয়ে তিনি ১৯ মে কাশিয়ানীতে যোগদান করে ওইদিনই অধিদপ্তরে ফিরে যান। ফলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহা আবার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। তাকে নামমাত্র পদায়ন করায় সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোবাখখারুল ইসলাম মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, 'কর্তৃপক্ষের আদেশে আমি কাশিয়ানী যোগদান করে অধিদপ্তরে সংযুক্তি পেয়ে অধিদপ্তরে অফিস করছি। সরকারি আদেশ মানতে আমি বাধ্য।'

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না এবং হবেও না।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনিচুর রহমান জানান, 'জেলা সমন্বয় সভায় কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. রাসেদুজ্জামান বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন এবং জরুরি ব্যবস্থা নিতে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন। আমি আগামী ৩ জুলাই অধিদপ্তরে মিটিংয়ে যাব। সেখানে বিষয়টি উপস্থাপন করব যাতে দ্রম্নত একজন কর্মকর্তাকে কাশিয়ানীতে পাঠানো হয়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে