যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। গত রোববার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিটি ওইদিন মধ্য রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নতুন কমিটি গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের আগামী ০১/০৭/২০২৪ তারিখ থেকে ০৭/০৭/২০২৪ তারিখের মধ্যে (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।'
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ যবিপ্রবিতে সোহেল রানাকে সভাপতি ও তানভীর ফয়সালকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ছাত্রলীগের ১১ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। কমিটির দুই বছর পার হলেও পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি সোহেল তানভীরের কমিটির নেতৃত্ব।
এই কমিটির সভাপতি-সম্পাদক বারবার সংগঠনের বিশৃঙ্খলামূলক কর্মকান্ড করে নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। ২০২৩ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে। কিছুদিন পর গত ১১ নভেম্বর আরেকটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
সর্বশেষ চলতি বছরের ৪ জুন রাতে যবিপ্রবির আবাসিক শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান প্রলয়কে (২৪) তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ছাত্রাবাসে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার (৩০৬ নম্বর) কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। সভাপতির উপস্থিতিতে রাতভর নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্তে ঘটনার সম্পৃক্ততার কারণে গত ২৫ জুন নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০০তম (বিশেষ) সভায় ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৯ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে। এছাড়া ৪ জনের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।