রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশ
লালমোহন-তজুমদ্দিন বিএনপি নেতাকর্মীদের ক্ষোভ-হতাশা
প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, ভোলা
ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীর সবার জীবনের 'গল্প' যেন একই রকমের, একই সুতোয় গাঁথা। রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশে মামলা-হামলায় জর্জরিত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঈদ উৎসবে তাদের একেকটা জীবন যেন একেকটি 'কষ্টগাঁথা'। এসব কষ্ট ও হতাশা নিয়ে দলটির ত্যাগী অসংখ্য নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে।
নেতাকর্মীরা বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা নিপীড়ন-নির্যাতনে এখন আর্থিকসহ নানা সংকটের মুখে তারা। এমন অবস্থায় কোনো সহযোগিতা তো দূরের কথা, ভালোমন্দের খবরও নেননি মেজর হাফিজ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের ভূমিকাসহ নানা কারণে আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন নেতাকর্মীরা। ঠিক সে সময় মেজর হাফিজের দলবিদ্বেষী মনোভাব ও আচরণে আরও বেশি কষ্ট পেয়েছেন তারা। মেজর হাফিজের একক খামখেয়ালিপনায় লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন নেতৃত্বহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, উপজেলা বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির কমিটিতে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের ছেলেসহ তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বসিয়ে পোস্টগুলো দখল করে রেখেছেন। এসব কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ঢাকায় থাকেন। যে কয়জন এলাকায় আছেন, তাদের সঙ্গে কোনো নেতাকর্মী বা তৃণমূলের যোগাযোগ নেই। তারা বলেন, প্রকৃতপক্ষে যারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত, তাদের মধ্য থেকে ত্যাগী নেতাকর্মীদের যুক্ত করে এসব কমিটি গঠন করলে দল যেমন উপকৃত হবে, ঠিক তেমনি তৃণমূল কর্মীদেরও বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও লালমোহন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মার্শাল হিমু বলেন, 'গত ১০ বছর যাবত মেজর হাফিজের সঙ্গে এলাকার মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি সরকারবিরোধী আন্দোলন বা দলীয় কর্মসূচি পালনে তার কোনো মাথাব্যথা ছিল না। এসব কর্মকান্ডে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমিও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। দল বা নেতাকর্মীদের প্রতি মেজর হাফিজের এমন অনিহা বা নেতৃত্বহীনতা থাকলে 'দুর্গ' হিসেবে পরিচিত লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপি একসময় নিশ্চুপ হয়ে যাবে।'
লালমোহন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব বাবুল পঞ্চায়েত বলেন, 'আমাদের অনেক কিছু হিসাব করতে হয়। তাই সবকিছু বিবেচনা করে প্রকাশ্যে দলীয় কর্মকান্ড চালাচ্ছি না। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমরা সব সময় যোগাযোগ রাখছি।' এ বিষয়ে দেশের বাহিরে থাকায় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।