কুষ্টিয়ায় এক মাসে দুইজন বাউলের আখড়ায় হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চলতি মাসের ৮ তারিখে জেলার মিরপুর উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামে বাউল নিশানের আখড়া বাড়ি ভেঙে ফেলে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। নিশানের চাচাত ভাইদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে নিশানের আখড়া ভেঙে জিকে ক্যানেলে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। ঘর ভেঙে গাছ কেটে নিশানকে পুরোপুরি উচ্ছেদ করে ওই সন্ত্রাসী চক্র। নিশান এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তবে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, নিশান সরকারি জায়গায় ঘর বানিয়ে আখড়া করেছিল। স্থানীয়রা যারা ভেঙে দিয়েছে। তারা আগের দিন নিশানসহ তার চাচাত ভাইদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। ডিবি পুলিশ নিশানকে গ্রেপ্তার করে।
বাউল নিশান জানান, তিনি আবাসস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে আখড়া বানিয়ে সেখানে সাধুসঙ্গ করতেন। সমাজপতিদের সঙ্গে তার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে তার আখড়া ভেঙে তা জিকে ক্যানালে ফেলে দেয়। তার আখড়ায় হামলা করার আগে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিল, সেটা তিনি জানতেন না। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথও জানান, নিশানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, সেটা তার জানা ছিল না। যেহেতু তিনি ফৌজদারি মামলার আসামি, তাই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
অন্যদিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে মসজিদে মাইকিং করে স্থানীয় বৃদ্ধা বাউল চায়না বেগমের বাড়িঘর ভাঙচুর করে তাকে উচ্ছেদ করে দেয় স্থানীয় মৌলবাদী চক্র। চায়না বেগম জানান, তার স্বামী ও তিনি লালন অনুসারি। তিনি টাকিমারা গ্রামে নিজের জমির ওপর আখড়া বানিয়ে বসবাস করে আসছেন। ৬০ বছর বয়সি এই বাউল জানান, তার স্বামীর মৃতু্যর পর আখড়াতে তাকে সমাধিত করা হয়। গত বুধবার সকালে তার আখড়া বাড়ি ভেঙে দেয় স্থানীয় মৌলবাদী চক্র। সাম্প্রদায়িক ওই গোষ্ঠী শুধু তার বাড়ি ভেঙে থেমে থামেনি, গাছপালা কেটে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেছে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সোহেল রানা জানান, অভিযোগ পেয়েছি, ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।' কুষ্টিয়া ভাবনগর শিল্প ও সাহিত্যচর্চা কেন্দ্রের সভাপতি হবিবর রহমান বিশু বলেন, হঠাৎ করে কুষ্টিয়ায় বাউলদের ওপর হামলা-মামলার ঘটনা ঘটছে। যা উদ্বেগজনক।