লোহাগড়ায় মধুমতীর তীব্র ভাঙন নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়ায় মধুমতী নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে তীরবর্তী এলাকা -যাযাদি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামে মধুমতী নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, শত শত বিঘা আবাদি জমি, গাছপালা, এমনকি বিদু্যৎ সরবরাহ লাইনের খুঁটি। ভাঙনের মুখে পড়ে অনেকেই বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের কয়েকশ' পরিবার। স্থানীয়রা জানান, একাধিকবার মধুমতি নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছেন এখানকার মানুষ। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড মধুমতী নদীর শিয়রবর পয়েন্টে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা এবারের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। রামকান্তপুর গ্রামের সাদ্দাম, আলাউদ্দিন, বালাম, চুন্নুমিয়া, আফজাল মোলস্না, হুমায়ুন কবির, আরফিন মোলস্না, ওসমান মুন্সী জানান, মধুমতি নদীর ভাঙনে তাদের বসতবাড়ি বার বার নদীগর্ভে চলে গেছে। এসব মানুষ নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। যেভাবে নদী ভাঙছে, এতে করে বসতভিটা কখন নদীর পেটে চলে যায়, এর ঠিক নেই। এবার বাড়ি ভাঙলে মাথাগোঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের। রামকান্তপুর গ্রামের তোতা মিয়া জানান, 'তাদের ৫ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এ পর্যন্ত তিনবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এবারও ভাঙনের মুখে রয়েছেন। বৃদ্ধ আরফিন মোল্যা জানান, বসতভিটা ছাড়াও তাদের আবাদি জমি, সুপারি বাগান, পুকুরসহ ভাঙনে ৫ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন তিনি। সেটিও ভাঙনের মুখে রয়েছে। এরপর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় থাকবেন, সে ঠিকানাও নেই তাদের। বালাম মোলস্নার স্ত্রী তহমিনা জানান, ইতোপূর্বে দুইবার তাদের বসতভিটা নদীগর্ভে ভেঙে গেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আশিকুল আলম জানান, মধুমতী নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, মাদ্রাসা, মসজিদ ভাঙনের শিকার হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে নদীগর্ভে পুরো এলাকা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি মধুমতী নদীর ভাঙন রোধে জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফী বিন মোর্তজাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষেয়ে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান যায়যায়দিনকে বলেন, 'লোহাগড়া উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের ভাঙনরোধে আপাতত কোনো বরাদ্দ নেই, এ কারণে কোনো ধরনের কাজ করতে পারছি না। তবে বরাদ্দ পেলে আগামীতে ওই এলাকায় ভাঙনে রোধে কাজ করা হবে।'