হাওড়ে শুভ্রতা ছড়াচ্ছে বর্ষার কদম ফুল
প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
মন্তোষ চক্রবর্তী, হাওড়াঞ্চল (কিশোরগঞ্জ)
আকাশ কখনো সাদা মেঘের ঘনঘটা, কিংবা এক চিলতে রোদের মুখে কালো মেঘের ভিড়। অথবা হঠাৎই মুষলধারায় বৃষ্টি! জ্যৈষ্ঠের শেষ ভাগে প্রখর রোদের পর এমন প্রশান্তিই বলে দেয় বর্ষাকালের আগমন বার্তা।
আষাঢ়-শ্রাবণ মূলত এ দুইমাস বর্ষাকাল। বর্ষার আগমন যখন চারপাশে, ঠিক তখনই আগমন ঘটে বর্ষার সঙ্গী কদম ফুলের। সবুজ পাতার ফাঁকে সাদার শুভ্রতা আর সোনালি রঙ্গে লম্বা সাদার আবরণে ঝুলে আছে কদম ফুল। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির টুপটাপ শব্দে মনে আসে অন্য এক শিহরণ। আবার ধুয়ে-মুছে অমলিন বিমোহিত সৌন্দর্যে ছড়াচ্ছে এই ফুলগুলো।
বর্ষার আগমনকে স্বাগত জানাতে কদম ফুল যেন সর্বদা প্রস্তুত। কদম ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হন না এমন বেরসিক মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আবার বর্ষায় প্রেমিকার মনোরঞ্জনে কদমের জুড়ি নেই। একই সঙ্গে বর্ষার প্রকৃতি বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছে স্নিগ্ধতা। বর্ষার উপহার সোনা রঙের কদম ফুল নিয়ে রচিত হয়েছে নানা গল্প, উপন্যাস, কবিতা আর গান। মানবকল্যাণে প্রকৃতির সৃষ্টি অসংখ্য ছোট-বড় মাঝারি বৃক্ষরাজির অংশ বিশেষ কদম ফুলের জুড়ি নেই।
সুনামগঞ্জের দিরাই শালস্না, নেত্রকোনা, কালিয়াজুড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাসিরনগর, হবিগঞ্জের লাখাই, আজমিরিগঞ্জ, বানিয়াচং এবং কিশোরগঞ্জের নিকলী, বাজিতপুর, ইটনা, মিঠামইন অষ্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা নিয়ে বিস্তীর্ণ হাওড়াঞ্চলে গ্রামের মেঠো পথে-প্রান্তরে তাকালেই চোখে পড়ে কদম গাছগুলো ভরে আছে ফুলে ফুলে। এ যেন আবহমান বাংলার বর্ষা বরণের প্রাকৃতিক আয়োজন। বিভিন্ন সড়কের পাশে এখন হলুদ আর সাদায় সেজেছে সর্বত্র।
হাওড়াঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছের শাখে শাখে সবুজ পাতার আড়ালে ফুটে উঠেছে অসংখ্য কদম ফুল। দেখলে মনে হয়, প্রকৃতি যেন আজ কানের দুলে সেজেছে কদম ফুল দিয়ে। এই ফুল পথচারীদের একবার হলেও নজর কাড়ে। কদম ফুলের গাছ ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্রে কাজে ব্যবহার হয়। যদিও হাওড়াঞ্চলে কদম গাছ কমে গেছে, তারপরও এখনো গ্রামের মানুষ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বলে অভিজ্ঞ লোকজনের ভাষ্য।
অষ্টগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার জানান, সবাই এখন বাড়ির আঙিনায় ফলমূল ও ফুলের গাছ লাগাচ্ছে, যার ফলে দিনদিন কমছে কদম ফুলের গাছ।
অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন- কদম ফুল শুভ্রতার প্রতীক। এই দেশে কদম ফুল বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিস্নাত দিনে বাঙালিদের মনে অন্য রকম অনূভূতি এনে দেয়। কদম গাছের কাঠ জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা হয়। বর্ষাকালে শোভাবর্ধনেও কদম ফুলের গুরুত্ব অপরিসীম।