বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০ বছরেও লাগানো হয়নি একটি ফ্যান
প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ১০ বছরেও নেয়নি কোনো বিদু্যৎ সংযোগ। তীব্র গরমের মধ্যেও কোনো ক্লাস রুমে নেই একটি ফ্যান। মাঝে মধ্যে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের নিজ বলাইলে 'নিজ বলাইল কিল্ডার গার্ডেন স্কুল' নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয় প্রায় ১০ বছর আগে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আতিয়ার রহমান। এ বিদ্যালয়ে পাঠদান করে প্রায় ১৫০ জন শিশু শিক্ষার্থী। গত কয়েক বছরের তীব্র গরমে সরকারিভাবে বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়, যাতে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা অসুস্থ না হয়ে পরে। সেখানে একটি বিদ্যালয় দীর্ঘ ১০ বছরে কোনো ফ্যান না লাগিয়ে কি ভাবে চলে, এটাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি আছে কি। এরকম একটি প্রশ্ন করেন ওই এলাকার এক বাসিন্দা।
বাবুল মন্ডল নামে এক অভিভাবক তার ফেসবুক একাউন্টে ওই বিদ্যালয়ের কিছু খুদে শিক্ষার্থীর ভিডিও ও ছবি পোস্ট করেন। সেই ভিডিওতে হৃদয় নামে এক শিশুকে বলতে শোনা যায় সে গরমে ঘেমে গেছে। কারণ জানতে চাইলে সে বলে, 'স্কুলে তো ফ্যান নাই তাই ঘেমে গেছি'। তারপর তাকে আবার প্রশ্ন করা হয়, 'তোমরা স্যারদের বলনি ফ্যান লাগাতে।' তখন সে ওই ভিডিওতে বলে, 'বলেছিলাম কিন্তু পরিচালক স্যার তো লাগাই না।' এ ভাবে আরও কয়েকটি শিশু একই কথা বলে।
এ বিষয়ে নিজ বলাইল কিল্ডার গার্ডেন স্কুলের পরিচালক আতিয়ার রহমান জানান, 'আমার স্কুলতো মর্নিং শিফটে চলে। তাই অত বিদু্যৎ নেওয়া বা ফ্যান লাগনোতে গুরুত্ব দেইনি। তারপরেও এ বছর একটু গরম বেশি পরছে দেখে ১০-১৫ দিন আগে একটি বিদু্যৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। আশাকরি অতি তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবো। বিদু্যৎ পেলেই ফ্যান লাগাব ক্লাস রুমগুলোতে।'
সারিয়াকান্দি কিল্ডার গার্ডেন স্কুল অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সবুজ জানান, 'এটা মোটেই ঠিক কাজ হয়নি, এত গরমে যেখানে ফ্যান থাকতে টেকা যায় না। সেখানে টিনের চালা টিনের বেড়ার একটি বিদ্যালয়ে যদি ফ্যান না থাকে তাহলে শিশু শিক্ষার্থী কেমন করে ক্লাস করবে। আমি পরিচালকে বলব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদু্যৎ ও ফ্যানের ব্যবস্থা যেন বিদ্যালয়টিতে করা হয়।'
সারিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম কবির বলেন, 'এখানে ছোট ছোট বাচ্চাদের পাঠদান করা হয়। অবশ্যই বিদ্যালয়টি পাঠদানের উপযুক্ত হতে হবে। এমন পরিবেশ রাখতে হবে যাতে বাচ্চারা সুন্দরভাবে পড়াশোনা করতে পরে। বিদ্যালয়ের পরিচালককে বলব যত তাড়াতাড়ি বিদু্যৎ সংযোগ নিয়ে বাচ্চাদের জন্য ফ্যান লাগাতে।' এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, 'আমি বিদ্যালয়টির পরিচালকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। প্রয়োজনে বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।'