মাদারীপুর জেলা কারাগারে নির্মিত হলো সুদৃশ্য জামে মসজিদ
প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার ও বিশেষ প্রতিনিধি
২০১৯ সালে শুরুতে ১৩ একর জায়গার ওপর নির্মিত হয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন সুবিশাল নতুন মাদারীপুর জেলা কারাগার। নির্মাণ পরিকল্পনায় (ডিপিপিতে) কোনো জামে মসজিদ না থাকায় নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্থানীয় কারা প্রশাসনকে। কারা এলাকায় কোনো মসজিদ না থাকায় কারা কর্মচারী, তাদের পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা এবং আগত দর্শনার্থীদের নামাজের জন্য দূর-দূরান্তে যেতে হতো। ফলে কারা কর্মচারীর সংশ্লিষ্টদের ওয়াক্তিয়া নামাজ ও জুমা আদায়ের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল।
কারাগার স্পর্শকাতর সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে কারাবিধিতে কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক অবস্থানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কারাগারে যেহেতু শীর্ষসন্ত্রাসী ও জঙ্গিসহ অনেক বিপথগামী মানুষ একত্রে অবস্থান করে, সেখানে যে কোনো সময় পলায়ন ও বন্দি অসন্তোষসহ বন্দি বিদ্রোহেরও ঝুঁকি থাকে। তাই কারা কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক হাজির থাকার এমন কঠোর বাধ্যবাধকতা কারাবিধিতে সংযোজিত হয়। ফলে সেখানকার কর্মচারীদের কারা এলাকার বাইরে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ে যে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হতো এবং তাদের ভোগান্তির বিষয়টি বর্তমান জেল সুপারের নজরে আসে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে মসজিদ নির্মাণে আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এ ছাড়া সারাবছরই বন্দিদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের জন্য বন্দির আত্মীয়দের ভিড় জমে থাকে জেলগেটে। কিন্তু নামাজের সময় হলে নামাজ পড়ার মতো কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো। বর্তমান জেল সুপার তুহিন কান্তি খান সমস্যা সমাধানে কারা জামে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তিনি বিষয়টি কারা মহাপরিদর্শকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের সম্মতি ও আংশিক আর্থিক সহায়তায় মসজিদ নির্মাণ শুরু হয়। পরে জেল সুপার, কারাগারের কর্মচারী এবং স্থানীয়দের দানশীল ব্যক্তিদের ঐকান্তিক ইচ্ছা, আন্তরিকতা ও আর্থিক সহযোগিতায় মাত্র চার মাসেই দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ নির্মাণ হয়। এই মসজিদটিতে একসঙ্গে প্রায় ২০০ জন মুসলিস্নর নামাজ আদায় করার সুযোগ রয়েছে। মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণশৈলীতে মুগ্ধ স্থানীয়রা।
নির্মাণ শেষ হওয়ায় মসজিদটি অচিরেই মুসলিস্নদের নামাজ আদায়ের খুলে দেওয়া হবে। স্থানীয় কারা কতৃর্পক্ষ আশা করছেন নবনির্মিত মসজিদটি বর্তমান কারা মহাপরিদর্দশক এএসএম আনিসুল হক উদ্বোধন করবেন। দূর-দূরান্ত হতে অনেক দর্শনার্থী নান্দনিক এই মসজিদ দেখার জন্য আসছেন এবং মসজিদটিকে ঘিরে তাদের মুগ্ধতার শেষ নেই।