পোরশা অংশে ২৭ স্থানে বাঁশের ব্যারিকেট
পুনর্ভবায় অবৈধ সুতিজালে পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিধন
প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২৪, ০০:০০
পোরশা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর পোরশা উপজেলার পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পুনর্ভবা নদীতে অবৈধ সুতিজাল দিয়ে প্রকাশ্যেই পোনাসহ মা মাছ নিধন করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পোনা ও মা মাছ নিধনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। নদীর ২৭ স্থানে চীনে তৈরি নিষিদ্ধ ওই সুতিজাল বা রিং জাল দিয়ে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা ও মা মাছ। আর এসব জেনেও স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অবৈধ রিং জাল, কাপাজাল, ভাসা জাল, কারেন্ট জাল, সুতিজালসহ নানা ধরনের জাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন কিছু জেলে এবং জেলে নয়, এমন ব্যক্তি। এতে এসব নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন ধরা পড়ছে অসংখ্য বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। এর সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ। আর সহজেই জাল পাতানোর জন্য নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁশের ব্যারিকেট দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, অবাধে মাছের পোনা নিধনের জন্য এই ব্যারিকেট মরণ ফাঁদে পরিণত হবে। অতীতে অনেক গরু-ছাগল বাঁশের তৈরি এই ব্যারিকেটে আটকা পড়ে মারা গেছে। তবে মাছ নিধনের মহাযজ্ঞ বন্ধ না হলে যেমন অনেকে ক্ষতির সম্মুখীন হবে, অন্যদিকে নদী থেকে হারিয়ে যাবে অনেক প্রজাতির মাছ।
নদীটির কয়েকটি বিল শকুনের বিল, হলদীর বিল, মাহারোটের বিল, চন্দের বিল, বোগলা উগাল বিলের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব স্থানে বাঁশের খুঁটি গেড়ে ছোট ফাঁসের জাল পেতে অবাধে মাছ ধরা হচ্ছে। এ ছাড়াও ছোট ছোট নৌকায় করে অবৈধ এসব জাল দিয়ে চলছে পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব। তারা টেংরা, ছোট আইড়, ছোট বোয়াল মাছ, পবদা, পুঁটি, টাকি, গুচি, বাইম ও চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ছোট ফাঁসের এসব জালে আটক করছেন। ক্ষুদ্রাকৃতির এসব পোনা মাছ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে এই এলাকায় নদী ও খাল বিলে দেশীয় মাছের সংকট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মনে করছেন অনেকে। প্রশাসনের নাকের ডগায় পোনা মাছ নিধন অনেকটা ওপেন সিক্রেট হলেও সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর যেন নির্বিকার। এসব কার্যক্রম উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটারের মধ্যে হলেও নজর নেই মৎস্য কর্মকর্তার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নদীতে মাছ ধরা কয়েকজন জেলে বলেন, সবাই মাছ ধরছে, এ জন্য সেও ধরছে। এ পর্যন্ত মাছ ধরতে কেউ বাধা দেয়নি। তবে যখন প্রশাসন বাধা দিবে তখন তারা মাছ ধরবে না বলে জানান।
উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম জানান, এগুলো সুতিজাল দিয়ে মাছ ধরার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে তারা সজাগ রয়েছেন এবং আগেও অভিযান পরিচালনা করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রম্নত ব্যবস্থা নেবেন।