ফরিদপুরে দু'টি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ছয়জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। শ্রমিকবেশে এসে ডাকাতি করত গ্রেপ্তারকৃতরা বলে জানায় পুলিশ।
জানা যায়, গত ১৪ জুন রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গোসাই ভাবুকদিয়া গ্রামের মৃতু্যঞ্জয় সরকারের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ৮-১০ জনের ডাকাতদল বসতবাড়ির ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থসহ মালামাল লুট করে। এর আগে গত ১০ জুন রাতে সদর উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামে আক্তার মোল্যার বাড়িতে ৮-১০ জনের ডাকাত দল ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।
দু'টি ডাকাতির ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। মামলার পর পুলিশ ডাকাতদের আটকে অভিযান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনজন, শরীয়তপুর থেকে দু'জন ও ফরিদপুর থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ছোড়া, লোহার রড, হাতুরি, সেলাই রেঞ্জসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। তিনি জানান, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার নারায়ণগঞ্জের কবির হোসেনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে কবির হোসেন (৪৩), সাইদুল ইসলাম (৪১), হৃদয় (৩৫), শরীয়তপুর থেকে সাইফুল ইসলাম (২৭), ফরহাদ হোসেন (৩২) এবং ফরিদপুর থেকে আতিয়ার শেখ (৩৮) গ্রেপ্তার হন।
পুলিশ সুপার জানান, তারা পিকআপে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে এসে ডাকাতি করে আবার নারায়ণগঞ্জে চলে যান। দীর্ঘদিন ধরে বসতবাড়ি ও মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছে। তারা ডাকাতিতে আসা-যাওয়ার সময় পিকআপে এমনভাবে অবস্থান করেন রাতে চেকপোস্টে আটকালে তারা নিজেদের মালামাল নামানো-ওঠানোর শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দেয়। মোর্শেদ আলম আরও জানান, দেশের বিভিন্ন থানায় কবির হোসেনের নামে সাতটি, সাইদুল ইসলামের নামে ৯টি এবং হৃদয়ের নামে পাঁচটি ডাকাতি ও ডাকাতি চেষ্টার মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান প্রমুখ।