শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তিনজনের নামে পর্নোগ্রাফি মামলা

হাওড়াঞ্চল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তিনজনের নামে পর্নোগ্রাফি মামলা

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোলস্না সুমনসহ তিনজনের নামে পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা করেছে একজন কলেজ শিক্ষার্থী। গত রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জের ১নং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আশিকুর রহমানের আদালতে এ মামলা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোলস্না সুমন, তার ভাগ্নে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন হীরা এবং মোলস্না সুমনের বড়ভাই মোশাররফ হোসেন মোলস্না বাবুলের নামে। মামলার বাদী ২৩ বছর বয়সি ওই ছাত্রী শহরের একটি সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন হীরাকে। এ ছাড়া হীরার দুই মামা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোলস্না সুমন ও তার বড়ভাই মোশারফ হোসেন মোলস্না বাবুলকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি এফআইআরের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত সদর থানায় মামালাটি লিপিবদ্ধ হয়নি বলে জানা গেছে।

সদর থানর অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর পর্যন্ত আদালত থেকে নথি না আসায় মামলা লিপিবদ্ধ করা হয়নি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় এই তরুণীর। দাম্পত্য জীবনে বনিবনা না হওয়ায় একমাস পরই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসেন। বাবার বাড়ি থেকেই আবারও কলেজে যাওয়া শুরু করেন। কলেজে যাওয়ার পথে প্রায়ই তাকে প্রেম নিবেদন করতেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন হীরা। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চলে শারীরিক সম্পর্ক। এ সময় হীরা কৌশলে কিছু স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন। বিষয়টি হীরার মামা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোলস্না সুমন ও মোশাররফ হোসেন মোলস্না বাবুলকে জানান মেয়েটি। তখন সুমন ও বাবুল মেয়েটিকে হুমকি দিয়ে বলেন, তাদের ভাগ্নের সঙ্গে বেশি বাড়াবাড়ি করলে এই শহরে থাকতে দেবেন না। পরে মেয়েটি হীরাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। এক পর্যায়ে ২০২৩ সালের ৮ জুন গোপনে কাজী ডেকে বিয়েও করেন তারা। বিয়ের পরে জানতে পারেন নাজমুল হীরা বিবাহিত, বাড়িতে তার স্ত্রী রয়েছে। জানতে পেরে মৌখিকভাবে তাকে তালাক দিয়ে চলে আসেন তিনি।

হীরা আবারও যোগাযোগ করে মেয়েটিকে বলেন, 'তুই যদি আমার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখিস তবে তোর নগ্ন ভিডিও ভাইরাল করে দেব।' এভাবে মেয়েটিকে বস্ন্যাকমেইল করে দুইবারে পাঁচ লাখ টাকা আদায় করেন হীরা। হীরার পর একই পন্থা অবলম্বন করেন তার মামা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোলস্না সুমন। তিনিও নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটির কাছ থেকে আদায় করেন একটি আইফোন ও একটি স্যামসাং ফোন। পরে একই পন্থায় সুমনের বড়ভাই মোশারফ হোসেন মোলস্না বাবুল আদায় করেন নগদ তিন লাখ টাকা। এভাবে তাদের টাকা দিতে দিতে বর্তমানে তিনি নিঃস্ব। এতকিছুর পরও শেষ রক্ষা হলো না মেয়েটির, অবশেষে তার অন্তরঙ্গ মুর্হর্তের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মেয়েটির অভিযোগ, নাজমুল হীরার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই তিনি এমনটা করেছেন। আর এক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেছেন তার মামা সুমন ও বাবুল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে