বগুড়া সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে ২৯ সেন্টিমিটার। উপজেলার শিমুলতাইড় গ্রামে বেড়েছে ভাঙন। ইছামারা গ্রামের ৪০০ মিটার এলাকাজুড়ে ধসের সৃষ্টি। ৫০ বিঘা কৃষিজমি যমুনায় বিলীন। বাড়াছে বাঙালি নদীর পানি।
উপজেলার যমুনা নদীতে গত রোববার থেকেই যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত শনিবার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৫.২৬ মিটার। গত রোববার বিকাল ৩টায় পানির উচ্চতা হয়েছে ১৪.৯৭ মিটার। তাই রোববার বিকাল ৩টা পর্যন্ত এ নদীর পানি ২৯ সেন্টিমিটার কমেছে। এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। তাই রোববার ৩টা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ১ মিটার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
তবে যমুনা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে বাঙালি নদীর পানি। গত শনিবার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৬৩ মিটার। রোববার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৮৪ মিটার। সারিয়াকান্দিতে এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫.৪০ মিটার। তাই বাঙালি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ১ মিটার ৭৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে যমুনা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলতাইড় গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ গ্রামের বেশকিছু বাসিন্দা এখন এ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন। এদিকে কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গোদাখালী গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন বেশ প্রকট আকার ধারণ করেছে। এখানে প্রায় ৪০০ মিটার এলাকাজুড়ে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ এলাকার ৫০ বিঘার বেশি কৃষিজমি যমুনাগর্ভে চলে গেছে। এখানে তীর সংরক্ষণ কাজের প্রায় ২০ মিটার এলাকার জিও ব্যাগ ধসে গেছে। এতে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে ইছামারা গোদাখালী এলাকার ৩শ'র বেশি পরিবার। হুমকিতে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধও। এ ছাড়া মানিকদাইড় গ্রামের উত্তর পাশে জামালপুর মাদারগঞ্জ সীমানায় যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এদিকে উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া গ্রামের যেখানে বাম তীর সংরক্ষণের কাজ হচ্ছে তার উত্তর পাশের বেশকিছু এলাকাজুড়ে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামেও যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডর নদী ভাঙন রোধে কাজ চলমান রয়েছে। এদিকে বোহাইল ইউনিয়নের শংকরপুর চরে যমুনা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে কয়েকদিনের যমুনা নদীর ভাঙনে বেশকিছু কৃষিজমি ভেঙে গেছে।
কামালপুর ইছামারা গ্রামের আজাহার আলী বলেন, গত ২ দিন ধরে ইছামারা গ্রামে যেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীতীর সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে, সেখানে যমুনা নদীর ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিনে ৫০ বিঘার বেশি কৃষিজমি যমুনায় বিলীন হয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে ইছামারা গ্রামের কয়েকশ পরিবার গ্রামছাড়া হয়ে যাবে। তাই খুব শিগগিরই এখানে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, 'ইতোমধ্যে কামালপুর ইছামারা গ্রামের যমুনা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। সেখানে নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, খুব শিগগিরই সেখানে জরুরিভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে।'