নানা কৌশলেও শেষ রক্ষা হলো না!

নেশার টাকা জোগাড় করতে তপুকে খুন

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
ছাত্রাবাসের পাশের বাড়ির ছেলের সঙ্গেই ফ্রি-ফায়ার গেম, আড্ডা ও ধূমপান সবই করতেন। কিন্তু আগের মামলার খরচ, ছাত্রাবাসের বকেয়া এবং মাদক সেবনের টাকা জোগাড় করতে সেই বন্ধুসুলভ প্রতিবেশীকেই অপহরণ করলেন। কিন্তু তাতে সুবিধা আদায় করতে না পেরে বিপদ আঁচ করতে পেরে তাকে হত্যার পর মরদেহ ফেলে দেওয়া হলো টিনের ট্যাংকে। নিজেদের আড়াল করতে নেন নানা কৌশল। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। পাবনার ঈশ্বরদীর চাঞ্চল্যকর কিশোর তপু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত দু'জনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। এ সময় ঘটনায় ব্যবহৃত একটি চাকু ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। মঙ্গলবার দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী। গ্রেপ্তাররা হলেন- পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া এলাকার জয়নাল আবেদীন জয় (২০) এবং ঈশ্বরদীর মাশুরিয়া পাড়ার ঈসা খালাশি (১৯)। এ ঘটনায় সোহেল নামের আরেক আসামি পলাতক। নিহত তপু মাশুরিয়াপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৫ জুন দুপুরে ঈশ্বরদীর মশুড়িয়া কলেজপাড়ার কিশোর তপু (১৪) নিজ বাড়ি থেকে বাহির হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর অজ্ঞাত অপহরণকারী কিশোর তপুর মোবাইল ফোন দিয়ে তার বাবাকে ফোন করে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ৭ হাজার টাকা দেওয়ার পরও খোঁজ না পাওয়ায় তপুর মা বাদী হয়ে পরদিন ১৬ জুন থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত সন্দেহে মূল আসামিদের শনাক্ত করা হলেও ভিকটিমকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গত ২২ জুন মশুড়িয়াপাড়াস্থ অরণ্য ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলায় একটি টিনের ট্যাংক থেকে তপুর অর্ধগলিত রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর ঢাকায় পালানোর সময় পাবনা শহরের ঢাকাগামী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রধান অভিযুক্ত জয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, তারা ঈশ্বরদী কলেজের পেছনে অরণ্য ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকতেন। তপুর বাড়ি ছাত্রাবাসের পাশে হওয়ায় একসঙ্গে গেম, আড্ডা ও ধূমপান করতেন। জয় এর আগে আতাইকুলা থানার একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় মামলার এবং ছাত্রাবাসে খরচ ও মাদক সেবনের টাকার জন্য সোহেল ও ঈসার সঙ্গে অপহরণের পরিকল্পনা করে। তারপর কৌশলে তপুকে ছাত্রাবাসে ডেকে এনে জিম্মি করে। তপু আতঙ্কে চিৎকার করলে তারা চাকু দিয়ে হত্যা করে ট্যাংকে ভরে রাখেন। এছাড়াও আসামিরা ঘটনা আড়াল করতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন। কিন্তু গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মাসুদ আলম, ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।