পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় রাউজানের খালে নেই পানি, চাষ ব্যাহত

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
জোয়ার-ভাটার প্রবাহ না থাকায় প্রায় শুকিয়ে যাওয়া চট্টগ্রামের রাউজানের বর্জাখালী খাল -যাযাদি
ভরা বর্ষা মৌসুমে কৃষকরা চাষাবাদের প্রয়োজনে আগের মতো আষাঢ়ে বৃষ্টির পানি পাচ্ছেন না। এমন পরিবেশে হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত রাউজানের বজ্যাখালী খালের মুখে থাকা স্স্নুইচ গেটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য খালের মুখে থাকা স্স্নুইচ গেটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে কোনো লোকজন না থাকায় খালগুলোতে জোয়ার ভাটার স্বভাবিক পানির প্রবাহ থাকছে না। এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে এখন রাউজানের কৃষকরা পানির অভাবে জমিতে বীজতলা তৈরি করতে নামতে পারছেন না। জানা যায়, উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের বজ্যাখালী খালের মুখে থাকা স্স্নুইচ গেটটির নিয়ন্ত্রণ বিএডিসি'র হাতে। এই সংস্থার অধীনস্থ আছে বাগোয়ান ইউনিয়নের হ্রদের খালের মুখে অপর একটি স্স্নুইচ গেট। এর বাইরে রাউজানের অন্যান্য খালের মুখে থাকা স্স্নুইচ গেটের নিয়ন্ত্রক পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাউজানের বেশিভাগ কৃষকের চাষাবাদ খালের পানি ওপর নির্ভরশীল। খালের মুখে থাকা স্স্নুইচ গেটগুলোর কারণে এখন জোয়ার ভাটার পানির স্বভাবিক প্রবাহ হারিয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগের মতো বৃষ্টি নেই। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কৃষকরা ঠিক সময় চাষাবাদে নামতে পারেন না। বিলম্বিত চাষাবাদে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এলাকার কৃষিজীবীরা বলেছেন, রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করতে প্রায় প্রতিটি খাল কেটে দিয়েছেন। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বীজ-সার দিয়ে আসছেন। এসব সহায়তা পেয়ে কৃষকরা খুশি। তবে স্স্নুইচ গেটগুলোর কারণে কৃষকরা বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে রয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা বলেছেন, বন্ধ করে রাখা স্স্নুইচ গেট খুলে দেওয়া ও নষ্ট স্স্নুইচ গেট মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বহু বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের অভিযোগ, এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কৃষক দোলন চৌধুরী বলেন, হালদা নদীর সঙ্গে যুক্ত বজ্যাখালী খালের পানির ওপর নির্ভরশীল উরকিরচর, পশ্চিম গুজরা, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কয়েকশ' একর জমির চাষাবাদ। এই খালের মুখে থাকা স্স্নুইচ গেটটি বন্ধ রাখায় কৃষকরা এখন জোয়ারের পানি পাচ্ছেন না। স্স্নুইচ গেট খুলে দিতে সেখানে গিয়ে বহুবার ধরনা দিলেও এতে সাড়া মেলেনি। খবর নিয়ে জানা যায়, বজ্যাখালীর মুখের স্স্নুইচ গেটটি বিএডিসি'র অধীনস্থ। এটির নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় এক ব্যক্তি। স্থানীয়রা বলেছেন, খালের মুখে স্স্নুইচ গেটটি বন্ধ রেখে ওই ব্যক্তি কম পানিতে মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করছেন। বিনাজুরী ইউনিয়নের কৃষক শ্যামল বড়ুয়া বলেন, প্রায় দুই দশক ধরে কাগতিয়া খালের মুখের স্স্নুইচ গেটটি অনেকটা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। স্স্নুইচ গেট নিয়ে কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার সুশীলের সঙ্গে কথা বললে তিনি এই প্রতিবেদকের সামনে বজ্যাখালীর মুখের স্স্নুইচ গেটি খুলে দিয়ে জোয়ার ভাটার পানি স্বভাবিক প্রবাহ করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। এমন অনুরোধ করার মধ্যে এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও খাল পাড়ে কৃষকরা বলেছেন স্স্নুইচ গেটটি খুলে দেওয়া হয়নি।