ভারতীয় নাগরিকসহ তিন জেলায় ৪ মরদেহ উদ্ধার
বাগেরহাটে ভাতিজার হাতে চাচা খুন, ঘাতক ছেলে ও মা গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
বাগেরহাটে ভাতিজার হাতে চাচা খুন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ঘাতক ভাতিজা ও তার মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে, শেরপুরে ভারতীয় নাগরিক ও জেলার শ্রীবরদী উপজেলা থেকে শিক্ষকের, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে গৃহবধূর ঝুলন্ত এবং ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে রেললাইনের উপর থেকে মাথা ও একহাত বিহীন যুবকের লাশ উদ্ধার হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর চাপাতলা এলাকায় ভাতিজার হাতে চাচা খুন হয়েছেন। বাড়ির পুকুরে মাছের পোনা ছাড়া নিয়ে চাচা-ভাতিজার কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সোমবার সন্ধ্যায় ভাতিজা হুমাউন শেখ লাঠি দিয়ে চাচার মাথায় আঘাত করেন। এতে আজাহার আলী শেখ অচেতন হলে তাকে স্থানীয়রা প্রথমে যাত্রাপুর বাজারে ও পরে বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে নেওয়ার পথে রাতে আজাহার শেখ মারা যান। এ ঘটনায় রাতেই বাগেরহাট সদর মডেল থানা পুলিশ ভাতিজা হুমাউন শেখ ও তার মা মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করে।
থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, সোমবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার যাত্রাপুর চাপাতলা এলাকায় এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় যায়। হত্যায় জড়িত সন্দেহে ভাতিজা হুমাউন ও তার মা মমতাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শেরপুর প্রতিনিধি জানান, শেরপুরে ভারতীয় পাসপোর্টধারী প্রণয় চন্দ্র সূত্রধর (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত রোববার সন্ধ্যায় পৌর শহরের গৃর্দানারায়ণপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরদিন সোমবার নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রণয় চন্দ্র ভারত থেকে শেরপুর শহরের গৃদানারায়ণপুর এলাকায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের জামালপুর জেলার নান্দিনা এলাকার মৃত হিরেন্দ্র সূত্রধরের ছেলে। ১৯৬৭ সালে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান।
মৃতের ভাই ডা.পীযুষ ও তার স্ত্রীর দাবি, প্রণয়ের সঙ্গে ভারতে তার স্ত্রী এবং সন্তানদের পারিবারিক কলহ চলছিল। এ কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পারিবারিক কলহের কারণে শাবনূর আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূর গলায় ফাঁস দিয়ে মৃতু্য হয়েছে। তিনি উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাহেরচরে প্রবাসী রবিন শেখের স্ত্রী ও উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামের সোনা মিয়ার মেয়ে। স্বামীর বাড়ির পাকা একতলা ভবনের একটি কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে এই মৃতু্যর ঘটনা ঘটে।
এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নাসির উদ্দিন বলেন, সন্ধায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, পারিবারিক কলহের কারণে গৃহবধূ শাবনূরকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তার ভাই সম্রাট শেখ বাদি হয়ে সিরাজদিখান থানা তদন্ত কেন্দ্রে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা নং ২০ তারিখ ২৫-০৬-২৪।
শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের শ্রীবরদীতে গোয়ালঘর থেকে মাসুদ আকন্দ আকন্দ (৪৫) নামে এক স্কুল শিক্ষকের গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গবরীকুড়া একে উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়ের গবরীকুড়া গ্রামে নিজ গোয়াল ঘরে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, শিক্ষক মাসুদ আকন্দ ঘটনার রাতে গভীর রাত পর্যন্ত টিভিতে খেলা দেখেন। ধারণা করা হচ্ছে- শেষ রাতে কোনো এক সময় গোয়াল ঘরের ধরনার সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকালে তার স্ত্রী গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করতে গিয়ে স্বামীকে ধরনার সঙ্গে ঝুলতে দেখেন।
শ্রীবরদী থানার ওসি কাইয়ুম খান সিদ্দিকী জানান, এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মঙ্গলবার সকালে রেললাইনের উপর থেকে উলঙ্গ অবস্থায় মাথা ও একটি হাত বিহীন অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। কোটচাঁদপুর রেলস্টেশন মাস্টার গোলাম রসুল জানান, সকাল ৮টার দিকে তিনি খবর পান উপজেলার বলুহর ডাকাতি বটতলার অদূরে রেল লাইনের উপর একটি লাশ পড়ে আছে। তিনি বিষয়টি যশোহর রেলওয়ে ফাঁড়িকে জানালে পরে তারা লাশ উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিয়ে যশোর রেলওয়ে ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই মনোতোষ বিশ্বাস জানান- তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে রেললাইনের পাশে উলঙ্গ অবস্থায় মাথা ও বাম হাত বিহীন একটি লাশ দেখতে পান। এলাকাবাসীর কাছে শুনেছেন লাশটি রেললাইনের উপর ছিল। এলাকাবাসী ট্রেন যাতায়াতের সুবিধার জন্য লাশটি রেললাইনের পাশে সরিয়ে রাখেন। লাশের পাশে একটি হ্যান্ডব্যাগ ও মোবাইল পেয়েছেন। তবে মোবাইলটি ভেঙে বিকল হয়ে গেছে। তার পরিচয় শনাক্তের জন্য ওই মোবাইলের সিম দিয়ে কয়েক জায়গায় ফোন দিলেও অপর প্রান্ত থেকে কেউ পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তদন্ত চলছে।
কোটচাঁদপুর থানার ওসি আল মামুন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পঠিয়েছিলাম। লাশ রেলওয়ে পুলিশ নিয়ে গেছে। পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।