রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া নেতিবাচক তথ্যগুলো দেখে আতঙ্কিত চারঘাট উপজেলাবাসী। বিশেষ করে স্কুল ও কলেজগামী কোমলমতি শিশু-কিশোর, ছাত্রছাত্রী ও কৃষকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সাপের বিভিন্নরকম নেতিবাচক তথ্য অতি দ্রম্নত ভাইরাল হওয়ায় রীতিমতো প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকার চায়ের দোকান ও বন্ধুমহলে। তবে বন্যপ্রাণী দপ্তরের তথ্যমতে, রাসেল ভাইপার নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এই সাপ শান্ত প্রকৃতির এবং তেড়ে গিয়ে কামড় দেয় না।
চারঘাট পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড থানাপাড়া গ্রামের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী স্নেহা জানায়, 'আমি গত কয়েকদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে এত পরিমাণ ভিডিও দেখেছি যে, এখন একা ঘুমাতে পারি না। ঘুমালে মনে হয় সাপ তেড়ে আমাকে কামড় দিচ্ছে।' একই রকম কথা বলেছেন, সরদহ সরকারি ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দিগন্ত, নিশীথা, মালাসহ আরও অনেকে।
পিরোজপুর গ্রামের কৃষক হেজবুথ বলেন, কৃষি ক্ষেতে ধান কাটতে কৃষকরা ভয় পাচ্ছেন। তবে সাপে কাটলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে দ্রম্নত সেবা পাওয়া যায়, সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
উলেস্নখ্য, চারঘাট উপজেলার প্রায় ২১ কিমি দীর্ঘ এলাকা পদ্মা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় এই তীরবর্তী ও চরাঞ্চলগুলোতে কৃষকরা কৃষি চাষাবাদ করেন। এলাকাবাসী জানায়, নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে এই সাপ প্রচুর দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সারদা ও কুঠিপাড়া সংলগ্ন নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে প্রায় এই সাপের ১৬টি বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে। গত কয়েক মাসে উপজেলায় দুইজন এই সাপে দংশিত হয়েছেন। এর মধ্যে মোক্তারপুর গ্রামের রাজশাহী ইউনিভার্সিটির একজন ছাত্রের মৃতু্য হয়েছে।
জেলা বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, রাসেল ভাইপারের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে, এর বৈজ্ঞানিক কোনো তথ্য নেয়। তবে সাপের সংখ্য বৃদ্ধি পেতে পারে। কৃষি জমিতে ফলন বেশি হলে ইঁদুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। সাপের প্রধান খাদ্য ইঁদুর। যার কারণে সাপ পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে এবং তাদের বংশ বিস্তার বেশি হচ্ছে। তবে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্কিত না হয়ে বাড়ির চারপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।