পাবনার সাঁথিয়ায় রিক্তা খাতুন (৪৫) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করে বাথরুমের ভেতরে মরদেহ ঝুঁলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। গত রোববার দুপুরে উপজেলার কাশিনাথপুর শগুইনা গ্রামে রহস্যজনক এই মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই স্বামী ও তার ছেলে পলাতক রয়েছে।
নিহত রিক্তা খাতুন কাশিনাথপুর ইউনিয়ন শগুইনা পশ্চিমপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের স্ত্রী ও আমিনপুর থানার নয়াবাড়ি গ্রামের মোবুদ্ধি শিকদারের মেয়ে।
জানা গেছে, নিহতের মাদকাসক্ত ছেলে দুরুন্ত (২২) প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য মায়ের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করতেন। টাকা না দিলে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মাকে বিভিন্ন সময় মারধরও করতেন তিনি। এভাবে মাঝেমধ্যেই তাদের সংসারে অশান্তি চলত। ঘটনার দিন দুপুরের দিকে প্রতিবেশী একজন বাথরুমের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু বুঝতে পেরে এসে দেখেন, মরদেহ ঝুঁলে আছে। তখন তিনি আত্মীয়স্বজনকে খবর দেন।
রোববার সকালে দিকে কাঠের বাটামসহ বাড়িতে থাকা লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ বাথরুমে ঝুঁলিয়ে রেখে বাবা ও ছেলে পালিয়ে যায় বলে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন।
পরে স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করে বেড়া হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পরিবারের মানুষজন থানায় খবর দিলে তারা মরদেহ থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের বড় বোনের মেয়ে আনোয়ারা খাতুন দুলি অভিযোগ করে বলেন, 'আমার খালার ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। মাদকের জন্য টাকা চাইত। না দিলে বাবা ও ছেলে মিলে খালাকে মারপিট করত। আমাদের আত্মীয়স্বজনদের সামনে খালার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করত। কিন্তু ভেতরে ভেতরে খালাকে খুব মারধর করত। ফোনে আমাদের বিভিন্ন সময় বলত, আমাকে বোধহয় মেরে ফেলবে তারা। আমার খালার মরদেহ উদ্ধার করার কথা জানতে পেয়ে এখানে এসে দেখি পুরো শরীর জখম হয়ে আছে। নাক-কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আমার খালাকে বাপ-বেটা মিলে পিটিয়ে হত্যা করে বাথরুমের মধ্যে মরদেহ ঝুঁলিয়ে রেখেছে। এই হত্যার বিচার চাই।'
নিহতের বাবা মোবুদ্ধি শিকদার বলেন, মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, নিহতের স্বামী ও ছেলেসহ পুরো পরিবার নেশাগ্রস্ত। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে