রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

দম্পতি খুন :তদন্তে প্রাধান্য পাচ্ছে 'জমির বিরোধ'

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ জুন ২০২৪, ০০:০০
দম্পতি খুন :তদন্তে প্রাধান্য পাচ্ছে 'জমির বিরোধ'

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে দম্পতি খুনের ঘটনা 'ডাকাতি বা সম্পদ লুট' এর জন্য হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার ভোরের এ হত্যাকান্ডের পেছনে পুরানো বিরোধের মতো কোনো কারণ আছে কি না সেসব বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন তারা।

তারা বলছেন, বাড়ির ভেতরে সব কিছু এলোমেলো করা হলেও তেমন কিছু খোয়া যায়নি। স্বজনরাও ?পুলিশকে গ্রামের বাড়িতে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের কথা বলেছেন।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার ইকবাল হোসাইন বলেন, এটিকে ডাকাতি বা চুরির ঘটনা বলা যাচ্ছে না। কারণ ওই নারীর গলায় স্বর্ণের চেইনটি নেয়নি খুনিরা। তার মোবাইল ফোনটিও সেখানে পাওয়া গেছে। তবে বাসার ভেতর সব আলমারি খোলা পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, 'এ দম্পতির স্বজনরা গ্রামের বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধের কথা বলেছেন, সেগুলোসহ কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চলছে। শফিকুরের ভাই মফিজুর রহমান পুলিশকে বলেছেন, তাদের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঁঞায়। সেখানে শরিকদের সঙ্গে জমি নিয়ে তার ভাইয়ের বিরোধ রয়েছে, যার জেরে তার বিরুদ্ধে চারটি মামলাও দেয় প্রতিপক্ষ।'

বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর মোমেনবাগ বটতলা এলাকায় নিজের চারতলা বাড়িতে খুন হন জনতা ব্যাংকের সাবেক গাড়িচালক শফিকুর রহমান (৬০) ও তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন (৫০)।

পুলিশ বলছে, এ দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে আল আমিন ইমন পুলিশের বিশেষ শাখার এসআই। ইমন ও তার স্ত্রী বাবা-মায়ের সঙ্গে একই ভবনে দোতলায় থাকেন।

ঈদে ইমন ফেনীতে তার দাদাবাড়ি এবং তার স্ত্রী বাবার বাড়ি যান। মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকেন। ছুটির কদিন শুধু শফিকুর ও ফরিদা বাড়িতে ছিলেন।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, তারা জানতে পেরেছেন শফিকুর রহমান প্রতিদিন সকালে উঠে বাড়ির পানির মোটর ছাড়তেন এবং বাসায় ফজরের সুন্নত নামাজ পড়ে মসজিদে যেতেন জামাত ধরতে।

তিনি আরও বলেন, 'ধারণা করছি, পানির মোটর ছাড়ার জন্য তিনি ঘর থেকে বের হলে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যার পর দোতলায় উঠে তার স্ত্রীকে হত্যা করে।'

পুলিশ গিয়ে বাসার নিচের প্রধান গেট ও দোতলার ঘরের দরজা খোলা পেয়েছে। ঘরের আলমারিও খোলা ছিল।

তবে ফরিদা ইয়াসমিনের গায়ে স্বর্ণালঙ্কার থাকলেও খুনিরা তা নেয়নি। বাসা থেকে কিছু খোয়া গেছে কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

শফিকুরের যাত্রাবাড়ীর বাড়িটির চারতলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ অতি সম্প্রতি শেষ হয়েছে। আরও কিছু কাজ চলমান রয়েছে। ভবনের দোতলায় শফিকুর ও তার ছেলে ইমন পরিবার নিয়ে থাকেন। ওপরের দুই তলার পুরোটা এবং নিচতলার একপাশ ভাড়া দেওয়া।

যাত্রাবাড়ী থানার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, শফিকুরের বাড়ির পাশে যে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনটি রয়েছে, সেটির দেয়ালে রক্তের ছাপ পাওয়া গেছে। তা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকান্ডের পর খুনিরা শফিকুরের ভবনের ছাদ দিয়ে সেই ভবন হয়ে পালিয়েছে। কিন্তু যারাই এই ঘটনা ঘটাক তারা শফিকুরের বাড়ি ও তার গতিবিধি সম্পর্কে আগেই ভালোভাবে জানত। স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী জমির বিরোধের দিক ছাড়াও খুনিদের আসা-যাওয়ার এসব বিষয়ও বিশেষভাবে আমলে নেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে