সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি খালকে কেন্দ্র করে দুই গ্রম্নপের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়। এরপর থেকেই উপজেলার চরবর্নিয়া গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পুরো গ্রাম জুড়ে সুনসান নীরবতা।
শাহজাদপুর উপজেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে চরবর্নিয়া গ্রাম। গালা ইউনিয়নের ছোট এ গ্রামে অশান্তি আর আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। দুইপক্ষের সংঘর্ষ তিনজন নিহতের কারণে মামলা, লুটপাট আর গ্রেপ্তার আতঙ্কে চরবর্নিয়া গ্রামে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গ্রেপ্তার আর হয়রানি এড়াতে চরবর্নিয়া গ্রাম এখন পুরুষশূন্য। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। পড়ে আছে খেত-খামার। আবার সংঘর্ষ শুরু হতে পারে- গ্রাম জুড়ে এমন গুজবে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামেও মামলা হয়েছে।
জানা যায়, সায়েম গ্রম্নপের দুইজন আর আখের গ্রম্নপের একজনের মৃতু্যতে থমকে গেছে গ্রামটির স্বাভাবিক কার্যক্রম। নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম আর বুক ফাটা কান্না, স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে আকাশ বাতাস। প্রতিটি বাড়িতে নারী আর শিশুরা অজানা আতঙ্কে সময় অতিবাহিত করছে। চরবর্নিয়া গ্রামের উপর দিয়ে নদী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হয়েছে।
নিহত সানোয়ারের শোকাহত মেয়ে শেলী ও খাদিজাতুল কোবরা বলেন, 'বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ৫ ভাইবোনকে এখন কে দেখাশোনা করবে। আমরা বাবা হত্যার বিচার চাই, জড়িতদের শাস্তি চাই।'
গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন বলেন, 'চরবর্নিয়া গ্রামে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা হৃদয়বিদারক ও পৈশাচিক। এ ধরনের ঘটনা এলাকাবাসী চান না। ইতোপূর্বে দুই গ্রম্নপের দ্বন্দ্ব নিরসন করে দিয়েছিলাম। আবারও সমঝোতার মাধ্যমে এ সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব ছিল। কিন্তু কেউ ধৈর্য ধরল না। এখন তিনটি পরিবার প্রিয় মানুষদের হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেল।'
শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, 'সায়েম গ্রম্নপের নিহত ছানোয়ারের মা আনতিরি বেগম শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। আখের গ্রম্নপের আহত ফরহাদ মারা গেলেও কেউ এখনও মামলা করেনি। তবে নিহত স্বজনদের মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে শাহজাদপুর থানার পুলিশ সুখচাদ (৪০), নান্নু (৪৫) ও আরশেদকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।