পিরোজপুরে নেছারাবাদ উপজেলার রামচন্দ্রপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটি বর্তমানে ভুতুড়ে ভবনে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ভবনের ছাদ চুইয়ে মেঝেতে পানি পড়ে। ভবনের অনেক জায়গার সিমেন্টের আস্তর খসে পড়েছে। ভবনে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। যেকোনো সময় ছাদ ধসে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ক্লিনিকে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা নেই।
এলাকাবাসীরা জানান, প্রত্যন্ত গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকটি হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেননি এই কমিউনিটি ক্লিনিকে। জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার জানালেও বিল্ডিংটির মেরামতের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কমিউনিটি ক্লিনিকটি বর্তমানে নিজেই রোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও পরিদর্শনে আসেনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ৮নং সমুদয়কাটি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এই ক্লিনিকটি ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। একতলা ভবনটিতে দেখা দিয়েছে একাধিক ফাটল, স্টোর রুমে বৃষ্টির পানি পড়ার কারণে চিকিৎসার জন্য আনীত ওষুধপত্র এলোমেলো করে মাটিতে পড়ে আছে। দেয়ালে ফাটল ধরায় আতঙ্কে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে ভবনের বাইরে। ভবনটির ভেতরে বসানো অগভীর নলকূপটি জন্ম থেকেই মৃত, পানি ওঠেনি কখনও। বিভিন্ন টিকা দিবসে বিল্ডিংয়ের বাহিরে বসে টিকা কার্যক্রম কর্মসূচি পালন করতে হয়।
এ ব্যাপারে রামচন্দ্রপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার শফিকুর রহমান জানান, ইউনিয়ন কমিউনিটি সেন্টারের ভবনটি নির্মাণ পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কোনো পরিচর্যা হয়নি। বর্তমানে বৃষ্টির সিজন থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে পানি পড়ে সমস্ত অবকাঠামো ভিজে যায় এমনকি ওষুধপত্রও নষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
ইউপি মেম্বার নাঈম চাঁন ও ভূমি দাতা লিলেন সুতার জানান, এ ব্যাপারে একাধিকবার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ফোনে জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। তিনি কয়েক বছর উপজেলার দায়িত্বের থাকলেও এখন পর্যন্ত কমিউনিটি সেন্টারটি পরিদর্শনে আসেননি।
৮নং সমুদয়কাঠি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বেপারী জানান, 'কমিউনিটি সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সঠিক স্বাস্থ্য সেবা দিতে হলে অবশ্যই নিরাপদ পানি ও সৌর বিদু্যতের লাইনসহ পাশের খালে একটি সিঁড়ির ঘাটলা দেওয়া জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না।'
নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফিরোজ কিবরিয়া জানান, উপজেলায় একাধিক কমিউনিটি সেন্টারগুলোর একই অবস্থা। 'বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।'