ঐতিহাসিক মুজিবনগরে দর্শনার্থীদের ভিড়
প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৪, ০০:০০
মেহেরপুর প্রতিনিধি
ঈদোত্তর বিনোদনের জন্য মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপেস্নক্সে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামছে। আম্রকাননের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে ঈদের ছুটিতে দূর-দূরান্ত থেকে কমপেস্নক্সটিতে ছুটে যাচ্ছে দর্শনার্থীরা।
বিনোদনের পাশাপাশি ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করতে পারছে শিশুরা। অন্য ধর্মালম্বীদেরও দেখা যাচ্ছে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায়ও খুশি তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে কেউ যেন কোনো নাশকতা করতে না পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
স্বাধীনতার শপথ ভূমি ও বাংলাদেশের মানচিত্র ফুটিয়ে তোলা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভিন্ন ভাস্কর্য স্বচক্ষে দেখতে পেয়ে খুশি তরুণ প্রজন্ম। এতে একদিকে তারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে জানতে পারছেন। অপরদিকে ঈদের আনন্দটাও উপভোগ করতে পারছেন। সারা বছর কাজের চাপে পরিবারকে সময় দিতে পারেন না অনেকেই। তাইতো ঈদের নতুন পোশাকে সেজে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন বিনোদনপ্রত্যাশীরা। যান্ত্রিক কোলাহল আর শহরজীবনের ব্যস্ততা না থাকায় মনের পালে হাওয়া লেগেছে তরুণ-তরুণীদের। বন্ধু-বান্ধব মিলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিনোদনপ্রত্যাশীদের ভিড় অব্যাহত আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ভিড় সপ্তাহব্যাপী চলতে থাকবে। স্থানীয় দর্শনার্থী ছাড়াও কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছে মুজিবনগরসহ জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
মুজিবনগর হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের শপথভূমি। দেশ স্বাধীন হওয়ার বাস্তব স্মৃতিচিহ্ন ধরে রাখতে মুজিবনগরে নির্মাণ করা হয়েছে ২৩ স্তম্ভবিশিষ্ট একটি স্মৃতিসৌধ। ৮০.৩৭ একর জমির ওপর প্রায় ১৩শটি বৃক্ষ শোভিত আম্রকাননের নিরিবিলি সবুজ-শান্ত পরিবেশে এক গর্বিত অহংকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্মৃতিসৌধসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টরভিত্তিক মানচিত্র। মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরে মানচিত্রটিকে ভাগ করা হয়েছে।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু তোরণ, পর্যটন মোটেল, হেলিপ্যাড, আধুনিক মসজিদ. এতিমখানা, সরকারি প্রাইমারি স্কুল, লাইব্রেরি, পোস্ট অফিস, অডিটরিয়ামসহ নানা স্থাপনা তৈরি করা হলেও কমপেস্নক্সের নির্মাণকাজ নকশা অনুযায়ী শেষ না হওয়ায় এর বাস্তব চিত্রটি এখনো ফুটে ওঠেনি।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসান খান জানান, ঈদ-পরবর্তী বিনোদনে দর্শনার্থীরা যেন নির্বিঘ্ন ও নির্মল বিনোদন উপভোগ করতে পারে তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছে। জনগণের নিরাপত্তা বিধানে ও আইনগত সহায়তা প্রদানে পোশাকে ও সাদা পোশাকের পুলিশসহ ট্রাফিকব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, মুজিবনগরসহ মেহেরপুরের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এ বছর যে পরিমাণ দর্শনার্থীর ভিড় হচ্ছে, আশা করা যাচ্ছে আগামী বছর থেকে এ সংখ্যা আরও বুদ্ধি পাবে। কারণ মুজিবনগর নিয়ে আমরা মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা পরিকল্পনা সাজিয়েছি। মুজিবনগর হবে একটি বিশ্বমানের পর্যটনকেন্দ্র।