তিন জেলায় বজ্রপাতে মৃতু্য ৫
লক্ষ্ণীপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা ধামরাইয়ে সাপের কামড়ে মৃতু্য
প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জে বজ্রপাতে শিশুসহ পাঁচজনের মৃতু্য হয়েছে। এদিকে লক্ষ্ণীপুরের রামগতিতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও ঢাকার ধামরাইয়ের সাপের কামড়ে এক বৃদ্ধার মৃতু্য হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর-
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাট জেলা সদরের ডেমা এলাকায় পৃথক বজ্রপাতে ২ জন এবং ফকিরহাট উপজেলায় বিদু্যৎস্পৃষ্টে ১ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে বৃষ্টির সময়ে বজ্রপাতে নিহতরা হলেন ডেমা ইউনিয়নের হেদায়েতপুর গ্রামের কাওছার হোসেনের ছেলে সেলিম সেখ (৩৪) ও পিসি ডেমা গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে শেখ সহিদুল ইসলাম (২৫)। এ ছাড়া একইদিন বিকালে জেলার ফকিরহাট উপজেলার পিলজংগ টাউন নওয়াপাড়া এলাকায় মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে গিয়ে মেহেদী মলিস্নক (১৭) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছে।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, সদরের ডেমা ইউনিয়নের হেদায়েতপুর গ্রামে বৃষ্টির সময়ে বাড়ির পাশে মাঠে গরু আনতে গেলে সেলিম সেখ বজ্রপাতে নিহত হয়। একই সময়ে পার্শ্ববর্তী পিসি ডেমা গ্রামের মাছের ঘেরের বাসায় শুয়ে থাকা অবস্থায় ঘেরের বাসায় বজ্রপাত হলে সেখ সাহিদুল ইসলাম নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
ফকিরহাট থানার ওসি আশরাফুল আলম জানান, বুধবার বিকালে টাউন নওয়াপাড়া গ্রামের রাজু মলিস্নকের ছেলে মেহেদি মলিস্নক বসত বাড়িতে মোবাইল ফোন চার্জ দিতে গিয়ে বিদু্যৎস্পৃষ্টে আহত হয়। পরিবারের লোকেরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বজ্রপাতে শিশুসহ দুজনের মৃতু্য হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও একজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত হলে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের গাগরামারি গ্রামে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বেদকাশী গ্রামের এনায়েত আলি (৪৫) ও একই গ্রামের নাজমুল হোসেন (৯)। আহত অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে হঠাৎ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় পার্শ্ববর্তী খুলনা জেলার কয়রা এলাকা থেকে নৌকাযোগে আসা ওই হতাহতরা আশ্রয় নিয়েছিল গাবুরা ইউনিয়নের গাগরামারি এলাকার একটি মৎস্য ঘেরের টংঘরে। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলে এনায়েত আলী ও শিশু নাজমুল নিহত হয়।
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বজ্রপাতে সানজিলা মার্ডি নামে এক আদিবাসীর মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের বড়বাড়ি চুনিয়া পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সানজেলা মার্ডি (৩৮) বড়বাড়ি গ্রামের মৃত বুধরাই মার্ডির ছেলে।
জাবরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, সানজিলা মাডি বাড়ির পাশে আম বাগান পাহারা দিচ্ছিল। ভোর রাতে হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে উদ্ধার করে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রামগতি (লক্ষ্ণীপুর) প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্ণীপুরের রামগতিতে স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্বামী শিহাব উদ্দিন পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সুজনগ্রামের আলী আকবর খার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত শাহনাজের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্ণীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
শাহনাজ চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের কলাকোপা গ্রামের কোডেক কলোনীর ফছিয়ল আলমের মেয়ে। স্বামী শিহাব উদ্দিন রামগতি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়নাল
রামগতি থানার ওসি মোছলেহ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'শিহাব উদ্দিন ও তার স্ত্রী শাহনাজ বেগমের প্রায় ঝগড়া বিবাদের ঘটনা ঘটত বলে খবর পাওয়া যায়। ঘটনার দিনও তাদের ঝগড়া হয়েছে বলে জানা যায়। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকার ধামরাইয়ের সাপের কামড়ে তহিরন নেছা (৬৫) নামে এক নারীর মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার আমতা ইউনিয়নের আগজেঠাই কাঁচা রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সাপের কামুড়ে মৃতু্যর বিষয়টি নিশ্চিত করে আমতা ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, 'সাপটি রাসেলস ভাইপার কিনা তা আমরা সঠিক জানতে পারিনি। তবে পাশের সাটুরিয়া এলাকায় ও ধামরাইয়ের জালসা এলাকায় রাসেল ভাইপারে দেখা পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
এলাকাবাসী জানান, নিহতের মরদেহটি সঙ্গে সঙ্গে কালো হয়ে যায়। হয়তোবা অতিবিষধর সাপে তাকে কামড়াতে পারে। তবে রাসেল ভাইপার সাপে কামড়িয়েছে কিনা তা স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ কেউ বলতে পারেননি।