ঈদুল আজহায় কদর বেড়েছে গাছের খাটিয়ার

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর কোরবানি দাতাদের কাছে অন্যান্য সরঞ্জামের সঙ্গে কদর বেড়েছে গাছের খাটিয়ার। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিভিন্ন গাছের তৈরি এ খাটিয়া বিক্রি করছেন। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে শেষ সময়ে কদর বাড়ে এসব গাছের খাটিয়ার। দাম বেশি হলেও ক্রেতারা প্রয়োজনের তাগিদে স্বাচ্ছন্দ্যে কিনে নিচ্ছেন। তবে বাজারে তেঁতুল গাছের খাটিয়ার চাহিদা বেশি। শনিবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঠ ব্যবসায়ীরা খাটিয়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। বিভিন্ন সাইজের খাটিয়া রয়েছে, সঙ্গে ছোট বসার চৌকিও বিক্রি করছে। ভালোই চলছে এবং ভালো দামে বিক্রি করছেন তারা। খাটিয়া বিক্রেতারা জানান, একটি ছোট খাটিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, মাঝারি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং বড় খাটিয়া ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ছোট, মাঝারি ও বড়- তিন ধরনের খাটিয়া রয়েছে। তবে তেতুঁল গাছের খাটিয়ার চাহিদা বেশি হলেও তেঁতুল গাছ পাওয়া বড়ই দুষ্কর বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তেতুঁল গাছ ছাড়াও মেহগনি, আকাশমনিসহ শক্ত আঁশ বিহীন গাছ দিয়ে খাটিয়া তৈরি করা যায়। জানা গেছে, প্রতি কোরবানির ঈদ আসলেই কদর বাড়ে খাটিয়ার। কোরবানি দাতারা দা, ছুরি, ধামা, বটিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নতুন পুরাতনগুলো প্রস্তত করে রাখে। উপজেলার কলেজ বাজার, ফাজিল খাঁর হাট, ফকিরিনির হাটসহ বিভিন্ন বাজারে ও সড়কের পাশে গাছের খাটিয়ার দোকান সাজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। তবে পশু কোরবানি করার পরে মাংস ছাটাই (টুকরা) করার জন্য প্রয়োজন হয় খাটিয়ার। এতে সব গাছ দিয়ে খাটিয়া তৈরি করা যায় না। খাটিয়া তৈরি করতে প্রয়োজন তেঁতুল গাছ, গজারি গাছ, আকাশ মনি হলে ভালো হয়। এর মধ্যে তেতুঁল গাছ ছাড়া অন্য গাছ দিয়ে খাটিয়া তৈরি করলে মাংসের সঙ্গে গাছের গুড়ি উঠে মাংসের মান নষ্ট হয়ে যায়। তাই কোরবানি আসলেই তেঁতুল গাছের চাহিদা বেড়ে যায়। কাঠ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে তেতুঁল গাছ সংগ্রহ করে স্ব-মিলে খন্ড খন্ড করে খাটিয়া তৈরি করে। ক্রেতা আবু হায়দার দিদার বলেন, খাটিয়ার দাম এ বছর একটু বেশি মনে হচ্ছে, একটি তেতুঁল গাছের খাটিয়া ৩৫০ টাকায় ক্রয় করেছি। তবে দাম বেশি হলেও উপায় নেই। কাঠ ব্যবসায়ী মো আলম জানান, বিগত পাঁচ ছয় বছর ধরে মৌসুমি এ ব্যবসা করছি, কোরবানি দাতারা দা, ছুরি নেওয়ার পাশাপাশি গাছের খাটিয়াও ক্রয় করে নেন। তবে এ বছর দাম একটু বেশি কারণ স-মিল ব্যবসায়ীরা গাছ ও কাটার দাম বেশি নিচ্ছে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে তেঁতুল গাছ পাওয়া বড়ই দুস্কর হয়ে উঠেছে। স-মিলের শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, কাঠ ব্যবসায়ীরা গাছের দাম বাড়িয়েছে, এক সিএফটি তেঁতুল গাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে ক্রয় করেন। ওই এক সিএফটি গাছে বড়, ছোট ও মাঝারি মিলিয়ে কমপক্ষে ৪টি খাটিয়া তৈরি করা হয়। যা কম হলেও ৮শ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। এতে কাঠ ব্যবসায়ীরা ভালোই লাভবান হচ্ছেন।