শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

সোনাতলায় টিসিবি'র নাম ভাঙিয়ে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা

সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
সোনাতলায় টিসিবি'র নাম ভাঙিয়ে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা

বগুড়ার সোনাতলায় টিসিবি কার্ড অনুস্মরণ করে কার্ড তৈরি করে বিভিন্ন প্রতারক চক্র পণ্য বিক্রয়ের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমন চিত্র দেখা গেছে কয়েক স্থানে। পরে গ্রহকদের রোষানলে পড়ে পালাতে হয় তাদের। তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ২৫০ টাকা নিয়ে সদস্য করে সয়াবিন তেল, মশুর ডাল, চিনি, ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্য দেওয়ার কথা বলে। গ্রাহক যখন পণ্য নিতে যায় তখন আলাদাভাবে পণ্যের দাম পরিশোধ করতে হয়। গ্রাহকদের অভিযোগ এসব পণ্য নিম্নমানের। সয়াবিন তেলের বদলে দেয় পামওয়েল, ময়লাযুক্ত চিনি কিংবা নিম্ন্নমানের মশুর ডাল। পরে গ্রাহকরা ওইসব পণ্য নিতে না চাইলে তাদের শুধু পণ্যের দাম ফেরত দিলেও নিবন্ধন করা ২৫০ টাকা আর ফেরত পান না। এভাবেই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ।

সোনাতলার পৌর এলাকার আগুনিয়াতাইড়, রাণীরপাড়া, জোড়গাছা, ভেলুরপাড়া, তেকানীচুকাইনগর, বালিয়াডাঙ্গাসহ বিভন্ন এলাকার হতদরিদ্র মানুষদের টার্গেট করে প্রতারণা করছে ওই প্রতারক চক্র। যেসব গরিব দরিদ্র ব্যক্তি টিসিবির তালিকাভুক্ত নয় তারা এহেন পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছে বারবার। প্রতারক চক্রও কয়েকদিন পর পর নতুন এলাকা টার্গেট করে এভাবে মানুষকে ঠকিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।

প্রতারণার অংশ হিসেবে ভুয়া টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে জোড়গাছা ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের প্রায় ৭০০ গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে মহিলা ইউপি সদস্য নাহিদ নাসরিন সাথীর বিরুদ্ধে। ১০ জুন সন্ধ্যায় প্রায় তিনশ' গ্রাহক ওই ইউপি সদস্যের বাড়ির উঠানে টাকা ফেরতের দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তিনি জোড়গাছা ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য। তিনি ওই গ্রামের রেজাউল হক রেজভীর স্ত্রী।

সরেজমিনের দেখা যায়, ১০ জুন সোমবার সন্ধ্যায় নাহিদ নাসরিন সাথীর বাড়িতে প্রতারিত ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত নেওয়ার ব্যপারে অবস্থান নিয়ে আছে। সাংবাদিকদের উপস্থিত দেখে সেখানে থাকা প্রায় তিন শতাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, 'টিসিবির কার্ড দেওয়ার কথা বলে মহিলা মেম্বার সাথী ও তার স্বামী আমাদের থেকে ২৫০ করে টাকা নেন এবং বলেন তোমাদের নিয়মিত টিসিবির পণ্য দেওয়া হবে। আমরা সেই অনুযায়ী মহিলা মেম্বার সাথীকে টাকা দেই। এরপর তিনি কোনো কার্ড না দিয়ে আমাদের আজ দুপুরে আসতে বলে।' ওই গ্রামের সহিদ মিয়া, মুনজিলা বেগম, জায়তন বেগমসহ অন্যরা অভিযোগ করে বলেন, 'আমরা আজকে (১০ জুন) আসলে তিনি আমাদের থেকে আরও ৮০০ টাকা নিয়ে নামহীন কোম্পানির প্রায় চার-পাঁচশ' টাকার পণ্য ধরিয়ে দেন। আমরা এ পণ্য নেব না। আমাদের টাকা ফেরত চাই। কিন্তু টাকা ফেরত চাইলে তিনি টাকা না দিয়ে আমাদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন।

এফজিএস গেস্নাবাল কোম্পানি লিমিটেডের সেখানে দায়িত্বে থাকা আব্দুলস্নাহ বলেন, 'আমরা যেসব পণ্য দিতে চেয়েছিলাম সেই পণ্যই দিয়েছি। তবে গ্রাহকদের হয়তো কেউ ভুল বুঝিয়েছে। আর যেহেতু একটা ঝামেলার স"ষ্টি হয়েছে সেহেতু আমরা পর্যায়ক্রমে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেব।'

এ ব্যাপারে সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন বলেন, 'আমি খোঁজ নিয়েছি ওটা সরকারি টিসিবি পণ্য না। তবে তাদের ব্যাপারে আরও খোঁজ-খবর নিচ্ছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে