নেত্রকোনার পূর্বধলায় ৩ দিনের ব্যবধানে এক খামাড়ির ২৪টি গরু মারা গেছে। এতে প্রায় ৪০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন খামারের মালিক জাহেরুল ইসলাম। কচি কাঁচাঘাস খাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে খামারটিতে গেলে দেখা যায়- একটি ষাঁড় গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে। এ সময় খামারের মালিক জাহেরুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার খামারের শ্রমিকরা মাঠ থেকে কাঁচা নেপিয়ার ঘাস কেটে খাওয়ানোর পর কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শনিবার সকালে একটি, দুপুরে একটি ও রাতে একটি- মোট তিনটি গরু মারা যায়। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে রোববার একদিনে ৮টি গরু মারা যায়। পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সবমিলিয়ে খামারের মোট ২৪ গরু মারা গেছে বলে জানিয়েছেন খামারের মালিক। মারা যাওয়া ষাঁড় গরুগুলো কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য তিনি প্রস্থত করেছিলেন। এতে তার প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক হোসেন জানান, খামারটিতে ষাঁড় ও গাভী মিলিয়ে বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় প্রায় ১০০-এর মতো গরু রয়েছে। অনেকগুলো ষাঁড় গরুকে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য তৈরি করা হয়েছিল। গত কয়েকদিনে ওই খামারের ২৪টির মতো গরু মারা গেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এমএমএ আউয়াল তালুকদার জানান, নাইট্রেট পয়েজনিং-এর কারণে এমনটি হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। বৃষ্টির সময় কচি ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকে। সে কারণে এসব ঘাস খেয়ে নাইট্রেট পয়েজনিং বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা যেতে পারে। তবে প্রকৃত কারণ জানার জন্য ঘাসের নমুনা ও মৃত গরুর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি গরুগুলো যাতে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য আমাদের মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুর শিবচরে একটি খামারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ঈদের জন্য প্রস্তুত করা ১৩টি গরু এবং পার্শ্ববর্তী একটি খামারের সাড়ে তিন হাজার মুরগি পুড়ে মারা গেছে। বুধবার ভোরে উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের কালিখোলা বাজার এলাকায় মিলন মুন্সির গরুর খামারে এ আগুনের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিলন মুন্সির গুরুর খামারে রাতে হঠাৎ করে আগুন দেখতে পায় আশপাশের লোকজন। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ায় গরুগুলোর বাঁধন খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। রশি ছিঁড়ে একটি গরু ছুটে বের হয়ে গেলেও আগুন নেভানোর আগেই অন্য ১৩টি গরু পুড়ে মারা যায়। এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী খামারে থাকা সাড়ে তিন হাজার মুরগি আগুনে পুড়ে মারা যায়। পরে খবর পেয়ে শিবচর ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা দীর্ঘসময় চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত মালিক মিলন মুন্সি বলেন, 'আমি অনেক কষ্ট করে তিল তিল করে গরুগুলোকে লালন পালন করেছি। কোরবানিতে বিক্রি করার জন্য এই গরুগুলো প্রস্তুত করা হয়েছিল। আজকে বিভিন্ন গরুর হাটে এই গরুগুলোকে বিক্রির জন্য নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাতেই আমার ১৩টি গরুসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার মুরগি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।'
এ বিষয়ে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।