শিবালয়ে যমুনা নদীর তীরে ব্যাপক ভাঙন

ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনার ভাঙন হুমকিতে থাকা বসতঘর -যাযাদি
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনা নদীর তীরে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যমুনা নদীর কড়াল গ্রাসে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজন। উপজেলার জাফরগঞ্জ থেকে শুরু করে মান্দার খোলা ও আলোকদিয়া চরাঞ্চলের প্রায় ১২-১৩শ' পরিবার তাদের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন। দ্রম্নত নদী ভাঙন রোধ না করা হলে তাদের ঘরবাড়ি যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। উপজেলার তেওতা, সমেজঘর তেওতা, আলোকদিয়া চর, শিবালয়, দক্ষিণশিবালয়, আরিচা লঞ্চঘাট, বোয়ালী, অন্বয়পুর, কুষ্টিয়া, দাশকান্দি, নয়াকান্দি, পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও মান্দারখোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন দ্রম্নত বন্ধ না করা হলে যে কোনো সময় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ঘাট স্বল্পতার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এদিকে আলোকদিয়া চরাঞ্চলে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় ঘরবাড়িহারা পরিবারের লোকজন মুজিব কেলস্নায় আশ্রয় নিয়েছেন। চরাঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মুজিব কেলস্নাটিও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তেওতা ইউনিয়নের সমেজঘর তেওতাগ্রামের খবির খান, হাজেরা বেগম জানান- গত ৪-৫ দিনে তাদের ঘরবাড়ির অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকিরা ঘরবাড়ি ভেঙে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে নদী ভাঙনের কারণে। তাদের এখন পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় থাকতে হবে। কেউ তাদের এখন পর্যন্ত খোঁজখবর নেয়নি। ওই এলাকার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দুই-এক দিনের মধ্যে এলাকার প্রায় একশ'-দেড়শ' ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। একই এলাকার সাজ্জাদ আলী মৃধা জানান, দ্রম্নত নদী ভাঙন রোধ না করা হলে ওই এলাকার প্রায় ৭-৮শ' পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বেন। আলোকদিয়া চরের বাবুল হাওলাদার জানান, গত প্রায় এক সপ্তাহে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেভাবে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে দ্রম্নত রোধ না করা হলে এবার বর্ষায় প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী হোসেন জানান, 'আমরা দ্রম্নত ভাঙন রোধ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।' শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল জানান, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এবছরও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।' উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলাল হোসেন বলেন, 'আমরা নদী ভাঙন পর্যবেক্ষণ করছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।' মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন বলেন, ভাঙন রোধে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।