সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ের নায়ক পঞ্চগড়ের নারী ফুটবলার ইয়ারজানকে সেমি পাকা ঘর উপহার দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুরে ইয়ারজানের বাবা-মায়ের হাতে 'ইয়ারজান নীড়'র চাবি হস্তান্তর করেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম। বিশেষ মোনাজাত শেষে স্থানীয়দের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান, হাড়িভাসা ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর ই আলম, স্থানীয় আওয়ামী নেতা ওসমান গণিসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় সাড়ে ৯ লাখ টাকায় তৈরি করা বাড়িতে রয়েছে ওয়াশরুম কাম টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। ঈদের আগেই এমন উপহার পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইয়ারজান ও তার পরিবার।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইয়ারজানের মা রেনু বেগম কৃষি শ্রমিক হিসেবে দিনমজুরী করে সংসার চালাতেন। বাবা আব্দুর রাজ্জাক হাপানি রোগী হওয়ায় কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। মায়ের আয় দিয়েই কোনো মতে খেয়ে না খেয়ে চলত চারজনের সংসার। ঘরের অবস্থাও ছিল জরাজীর্ণ। বেড়াচাটির ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করতেন তারা। ছিল না একটি ভালো টয়লেট। সাফ জয়ের পর বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে নজরে আসে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের। ইতোমধ্যে ইয়ারজানের পরিবারকে নানাভাবে সহযোগিতা করা হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ে আসার পরদিন ইয়ারজানকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তার বাড়ি পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম। এ সময় তিনি ইয়ারজানের পরিবারের জন্য পাকা বাড়ি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর প্রশাসনের উদ্যোগে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমিপাকা ঘর এবং প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ওয়াশরুম, টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইয়ারজান বলেন, 'ঈদের আগে আমার জন্য এটি দারুণ একটি উপহার। আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার বাবা-মা একদিন পাকা ঘরে ঘুমাবে, আমি এমনটাই আশা করেছিলাম। আজকে জেলা প্রশাসক স্যারের জন্য আমার সেই আশা পূরণ হয়েছে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।'
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা চেয়েছি পঞ্চগড়ের কৃতীসন্তান ইয়ারজান ও তার পরিবার যেন সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারে। এজন্য দুই কক্ষের সেমি পাকা ঘর, ওয়াশরুম, টয়লেটসহ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।'