চট্টগ্রামে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০

চট্টগ্রাম বু্যরো
চট্টগ্রাম নগরীর সরাইপাড়া সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের কারণে তাকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও পাঠদান থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আব্দুর রহিম (৪৩)। তার বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। বর্তমানে তিনি সরাইপাড়াতে বসবাস করে। জানা যায়, গত ৪ জুন ওই বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌন হয়রানিবিরোধী একটি সভায় অষ্টম ও নবম দুই শিক্ষার্থী, তথ্য কর্মকর্তা, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ সভায় উপস্থিত সবার সামনে তাদের সঙ্গে শিক্ষক রহিমের করা যৌন হয়রানির ঘটনার বর্ণনা দেন। সভা শেষে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আমিন ঘটনা তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট সিটি করপোরেশনে জমা দিতে নির্দেশ দেন। ঘটনা তদন্তে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিলকিছ জাহানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান কমিটির সদস্যরা। অষ্টম ও নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীরা জানান, আব্দুর রহিম নামের ওই শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে নানা অজুহাতে ছাত্রীদের শরীরে হাত দেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা ছাড়াও তার ক্লাসের বেশিরভাগ ছাত্রীদের গায়ে হাত দেন। তারা বলেন, ক্লাসে বা ক্লাসের বাইরে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের বিরক্ত করেন শিক্ষক রহিম। যৌন হয়রানি ছাড়াও রহিমের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও অভিযোগ। পরীক্ষার খাতায় নম্বর অনিয়মের জন্য এর আগে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। এছাড়া বোর্ড পরীক্ষায় অনিয়মের জন্য তাকে দায়িত্ব পালন থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যৌন হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।' এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বলেন, '৪ জুন বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌন হয়রানিবিরোধী একটি সভায় অষ্টম ও নবম দুই শিক্ষার্থী শিক্ষক আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। ওই সভায় তথ্য কর্মকর্তা, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। পরে সভাপতি ঘটনাটি তদন্ত করতে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষিকা তদন্ত করে রিপোর্ট শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন।' বিদ্যালয়ের সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর নুরুল আমিন বলেন, 'ওই শিক্ষার্থীরা আমাদের সামনে ঘটনাটি বলেছে। আমি প্রধান শিক্ষককে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। তারা তদন্ত রিপোর্ট সিটি করপোরেশনে জমা দিয়েছে।' চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, 'বিষয়টি আমরা জেনেছি। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে পাঠদান থেকে বিরত রাখতে প্রধান শিক্ষককে বলেছি। বিদ্যালয় শিক্ষিকাদের করা তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছি, তবে আমরা আরও অধিকতর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।'