ঈদুল আজহায় অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের বিশালাকার ষাঁড় 'মানিক'কে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উদ্যোক্তা হামিদা। ৫৪ মণ ওজনের বিশাল আকৃতির মানিককে গত তিন বছর ধরে কোরবানির হাটে ওঠালেও বিক্রি না হওয়ায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন ওই নারী উদ্যোক্তা। বার বার অবিক্রীত গরুটি এবারের কোরবানির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার হিসেবে দিতে চান তিনি।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে হামিদা আক্তার। বঙ্গের আলীগড় খ্যাত করটিয়া সা'দত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করা হামিদার স্বপ্ন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার। মনের ভেতরের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চাকরি না করে গত আট বছর ধরে গরু লালন-পালন শুরু করেন হামিদা আক্তার। গত আট বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি গাভি কিনে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে হাঁটেন। গাভি থেকে দুটি বাছুর জন্ম নিলে তাদের নাম রাখেন মানিক ও রতন। দুই বছর আগে কোরবানির ঈদে রতনকে বিক্রি করতে পারলেও অবিক্রীত থেকে যায় মানিক। গত বছর কোরবানির ঈদে মানিকের কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার মানিককে কোরবানির হাটে নিয়ে বিক্রি করতে চান না হামিদা। তিনি এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার হিসেবে দিতে চান মানিককে। বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নারী উদ্যোক্তা হতে সহযোগিতা চাইবেন বলে জানান।
নারী উদ্যোক্তা হামিদা আক্তার জানান, এর আগে ২০২১ সালে ৩৬ মণ ওজনের মানিকের দাম চেয়েছিলেন ১৪ লাখ টাকা। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় সেবার বিক্রি করেননি। ২০২২ সালে হাটে না উঠিয়ে বাড়ি থেকে বিক্রি করতে চেয়ে নিরাশ হন। সর্বশেষ ২০২৩ সালে কোরবানির হাট কাঁপিয়েছে তার ৫২ মণের মানিক। রাজধানীর গাবতলী কোরবানির হাটে ৫২ মণ ওজনের ওই মানিকের দাম চাওয়া হয় ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু সেবারও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় মানিককে ফেরত আনা হয়। তবে ফেরত আনার পর হামিদার বাড়িতে গিয়ে জনৈক ক্রেতা মানিকের দাম দিতে চান ১০ লাখ টাকা। কিন্তু এতে তিনি রাজি হননি। এখন সেই মানিককে নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এবার মানিকের ওজন দাঁড়িয়েছে ৫৪ মণ। বিশালাকার মানিককে কোরবানির হাটে ওঠাতে ভয় পাচ্ছেন- যদি বিক্রি না হয়।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী উদ্যোক্তাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেন বলে তিনি শুনেছেন। তাই দানবাকৃতির মানিককে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে উপহার হিসেবে দিতে চান। বিনিময় তিনি কিছু চান না। তবে নারী উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চাইবেন।
দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহীদুজ্জামান জানান, বিশাল আকৃতির ওই ষাঁড়টি গত কয়েক বছর ধরে বিক্রি করতে পারছেন না হামিদা। দিন দিন গরুটির ওজন বাড়ছে। বর্তমানের ওজন প্রায় দুই হাজার একশ' কেজি। এমন দানবাকৃতির গরু বেশিদিন বাঁচিয়ে রাখা খুবই কষ্টসাধ্য।