ভোটের ফলাফলে প্রভাবশালীদের হারিয়ে সাধারণদের জয়জয়কার
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাচনের বিশ্লেষণ
প্রকাশ | ১০ জুন ২০২৪, ০০:০০
মো. রজব আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ ধাপের ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন। নির্বাচনে প্রভাবশালীদের হারিয়ে সাধারণদের জয়জয়কার। তাই ভোট শেষ হলেও শেষ হয়নি ভোটের আলোচনা।
এ নির্বাচনে দেখা যায়, শহরের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও শহরের ধনাঢ্য কয়েকজন ব্যবসায়ী উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে দিনাজপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপির ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমানের পক্ষে নির্বাচনের মাঠে নামলেও ভোটের ফলাফল ঘরে নিতে পারেনি।
অন্যদিকে বিশাল ব্যবধানে বিজয় অর্জন করেছেন কেবল সাধারণ ভোটার নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন। এ কারণে ভোটের আলোচনায় প্রার্থীদের ছাড়িয়ে, প্রতিপক্ষ হিসেবে আলোচনায় এসেছেন প্রশাবশালী নেতা ও সাধারণ ভোটার। ফলে ভোট শেষ হলেও এখনো চলছে ভোটের আলোচনা।
ভোট বিশ্লেষকরা বলছেন- ভোটের ফলাফল অর্জন হয়েছে, প্রভাবশালীদের নয়, সাধারণ ভোটারদের ইচ্ছায়, জয় হয়েছে সাধারণ ভোটারদেরই। এ কারণে শহরের চা-স্টলগুলোতে চলছে ভোটের চুলচেরা বিশ্লেষণ।
নির্বাচনের মাঠ দেখা যায়- ফুুলবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন ও ঘোড়া প্রতীক নিয়ে দিনাজপুর-৫ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুল। এ কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় প্রভাবশালী নেতা, শহরের ধনাঢ্য কয়েকজন ব্যবসায়ী, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এমপির ছোট ভাই মুশফিকুর রহমান বাবুলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নামেন।
অপরদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টনের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নামেন সাধারণ ভোটার, খেটে খাওয়া মানুষ ও নতুন প্রজন্মের যুবকরা। এতে দেখা যায় একদিকে প্রভাবশালীদের পদচারণা অপরদিকে শুধুই সাধারণ নারী-পুরুষ ও যুবকসহ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা। এই যখন নির্বাচনী মাঠের অবস্থা তখন অনেক নেতা ভাবতেই পারেননি নির্বাচনের ফলাফল সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে যাবে।
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, আতাউর রহমান মিল্টন ৫৭ হাজার ৬৬২ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে শহরের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতা, ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের নিয়ে নির্বাচনের প্রচারণা করা প্রার্থী এমপির ছোট ভাই মুশফিকুর রহমান বাবুল ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৬৪ ভোট। শুধু তাই নয়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মামুনুর রশিদ নামে এক দলিল লেখক ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিউলি রানী নামে এক সাধারণ গৃহবধূ। অথচ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জু রায় চৌধুরী ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নীরু সামসুন্নাহার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দ্বিতীয়বারে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, নির্বাচনে জয়লাভ করেছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, তাই তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা পরিষদকে সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।