পাবনার আটঘরিয়াসহ আশপাশের হাট বাজারগুলোতে জমজমাট হয়ে উঠছে তালের শাঁস বিক্রি। প্রতিদিন হাজার হাজার তাল কেটে শাঁস বিক্রিতে ব্যস্ত তালকুর ব্যবসায়ীরা। এলাকার সর্বত্র তালের শাঁস বিক্রির ফলে তালগাছগুলো তালশূন্য হয়ে পড়ছে, ফলে পাকা তালের নানা মুখরোচক খাবার খেতে মানুষকে গুনতে হবে অতিরিক্ত দাম।
নাগদাহ গ্রামের তালগাছের মালিক আব্দুল মান্নান জানান, তাল পাকাতে পারলে অনেক টাকা আয় হতো। কিন্তু পাকা ধরলে তাল এমনিতেই গাছের নিচে পড়লে পথ চলতে অন্য মানুষ কুড়িয়ে নেয়। ফলে পাকানোর চেয়ে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা নগদ যা পাওয়া যায় তাই লাভ।
উপজেলা সদর দেবোত্তর বাজারের তাল শাঁশ ব্যবসায়ী হান্নান জানান, প্রতিটি তাল (৩টি শাঁস) ১৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এতে প্রতিটি শাঁস ৫ টাকা হিসেবে প্রতিদিন তার ৩০০ থেকে ৪০০ তাল বিক্রি করে গড় আয় হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা। অন্য দিকে কমপক্ষে ৩০০ থেকে ৪০০ তালসহ প্রতি তালগাছ (শুধু তাল) কিনতে হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। ফলে খরচ বাদে তার নিট আয় দুই হাজার টাকার বেশি।
চাঁদভা বাজারে তালকুর বিক্রেতা আব্দুর রশিদ জানান, মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এই তালকুর বিক্রি শুরু হয়েছে। একজন সহযোগীসহ প্রতিদিন ৩০০ তালের ৯শ' শাঁস ৫ টাকা হিসেবে তার বিক্রি চার হাজার ৫০০ টাকা, ক্রয় মূল্য ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বাদ দিলে তাদের জনপ্রতি থাকে ৮০০ টাকা।
আটঘরিয়া বাজারে তালকুর বিক্রেতা শাহীন জানান, এখানে তার প্রতিদিন প্রায় ৪০০ তাল (১২০০ শাঁস) বিক্রি হয় ছয় হাজার টাকা। এ জন্য তাকে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা গাছ কিনতে ব্যয় করতে হয়।
পরিবহণ ব্যয় বাদেও দৈনিক প্রায় পাঁচ হাজার টাকা থাকে। কোনো কোনো বাজারে একাধিক তারকুর বিক্রেতা তালের শাঁস বিক্রিতে ব্যস্ত।
টেবুনিয়া হাট-বাজারে দিনব্যাপী আজিজুল ও কালাম নামে দুইজন বিক্রেতা বেচাকেনায় ব্যস্ত। তাদের দাবি প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ তাল বিক্রি করে তাদের দৈনিক আয় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। তালগাছ ক্রয় ও যাতায়াত খরচ বাদেও তাদের দৈনিক থাকে প্রায় পঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। বিকাল থেকে রাত ৮ পর্যন্ত চলে এই বেচাকেনা।