শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

রাউজানে ভেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে হলদিয়া রাবার বাগানের কৃষি জমি

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
চট্টগ্রামের রাউজান হলদিয়া রাবার বাগানের ভেতর কৃষি জমিতে মাটি কেটে তৈরি করা মাছের প্রজেক্ট -যাযাদি

চট্টগ্রামের রাউজান হলদিয়া রাবার বাগানের ভেতর ব্যক্তি মালিকানায় থাকা কৃষি জমিতে মাটি কাটা হচ্ছে স্কেলেভেটর (ভেকু) দিয়ে। সরকারি ঘোষণা অনুসারে কৃষি জমি খনন নিষিদ্ধ। মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতরা বলেছেন, পাহাড়ের পাদদেশের কৃষি জমি কেটে মাছ চাষের প্রজেক্ট করা হবে। কৃষি জমি কেটে ফেলার ঘটনা জেনে খনন কাজে বাধা দিয়েছেন রাবার বাগানের ম্যানেজার সুজিত রায় ভৌমিক। তিনি কৃষি জমি খননের ব্যাপারে সরকারিভাবে কঠোর নিষেধের বিষয়টি খনন কাজে জড়িতদের স্মরণ করিয়ে দেন।

একই সঙ্গে তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি লিখিতভাবে জানান রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে। বিষয়টি জেনে কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শনে পাঠান তার অধস্তন এক কর্মকর্তাকে। ঘটনার সত্যতা পেয়ে খননকাজ বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, যেখানে খনন কাজ চলছে, সেই এলাকাটির চারদিক রাবার বাগান ঘেরা। বাগানের টিলাভূমির নিচে অন্তত সাত একর কৃষি জমি। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই জমিতে চাষাবাদ হয়। জমির মালিক হলদিয়া ইউনিয়নের গর্জনীয়া এলাকার গোলাফুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্থানীয় দুই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে জমির মাটি কেটে মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এলাকাটি নিরিবিলি স্থানে হওয়ার সুযোগ নিয়ে তারা চুপিসারে কৃষি জমির কাটছিলেন প্রশাসনের নজর এড়িয়ে।

দেখা যায়, হলদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গত কয়েক মাসে আরও বেশ কয়েকটি স্থানে জমি ভরাট হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়েছেন এলাকার কিছু ব্যক্তি। অভিযোগ রয়েছে, কৃষি জমি ভরাট কাজে নেপথ্যে সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধি। জমির মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে আপস-রফায় এমন কাজ করা সম্ভব হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিমত।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, কৃষি জমি ভরাট ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। তিনি এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে নিদেশ দেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রিদোয়ানুল ইসলাম নির্দেশ পেয়ে বিভিন্ন স্থানে ভরাট কাজ দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে দায়ীদের ডেকে ভরাট কাজ বন্ধ ও অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

গত বুধবার হলদিয়া রাবার বাগানের ভেতর কৃষি জমি কাটার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি কাটার কাজ বন্ধ থাকলেও এখনো খনন কাজে ব্যবহৃত স্কেলেভেটরটি বাগানের গাছের ফাঁকে রাখা আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাবার বাগানের ম্যানেজার সুজিত রায় ভৌমিক কৃষি জমি খনন ও প্রশাসনে অভিযোগ দেওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, বাগানের ভেতর কৃষি জমি খননকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জমির মালিক মোহাম্মদ ইসমাইলের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে